সরকার ফেলে দেওয়া এত সহজ নয় : শেখ হাসিনা

টুইট ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দু-একটা গাড়িতে আগুন দিয়ে বিএনপি ভেবেছে সরকার ফেলে দেবে, এতো সহজ নয়। বুধবার সিলেটে সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
এই জনসভার মধ্যে দিয়েই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করলেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বোমাবাজি, আগুন দিয়ে মানুষ মারার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচন হতে দেবে না-এতো সাহস কীভাবে পায়? লন্ডন থেকে কুলাঙ্গার নির্দেশ দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। দু-একটা গাড়িতে আগুন দিয়েই বিএনপি ভেবেছে সরকার ফেলে দেবে, এতো সহজ নয়। অত ভাত দুধ দিয়ে খায় না। তারেক রহমান মানি লন্ডারিংয়ের আসামি। লন্ডনে বসে মানুষ পুডিয়ে মারার হুকুম দেয়।
বিকেল সোয়া তিনটার দিকে শেখ হাসিনা সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছান। তিনি সভাস্থলে পৌঁছাবার পর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সরকারি আলিয়া মাদরাসার মাঠ।
তিনি মঞ্চে উপস্থিত হবার পর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। মঞ্চে বসার পর ‘বাবা শাহ জালালের দেশ সিলেট ভূমিরে…’ এবং ‘কোন মেস্ত্ররি নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়…’ গান দুটি পরিবেশন করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দিলো না। কেন দিল না? বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক গ্যাস। ওই আমেরিকা প্রস্তাব করলো গ্যাস বিক্রি করতে হবে। কারণ আমেরিকার কোম্পানি এখানে গ্যাস উত্তোলন করে। আমি বলেছিলাম আমি গ্যাস বেচবো না। এই গ্যাস আমাদের জনগণের, এই গ্যাস জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হবে। জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করে যদি ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে অতিরিক্ত থাকে তাহলে বেচবো। তারা খুব নাখোশ হলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তা ছাড়া আমাদের দেশেরও কিছু লোক ছিলো।
তিনি আরও বলেন, যে জায়গায় কূপ খনন করে গ্যাস পায় নি, সেই একই জায়গায় কূপ খনন করে গ্যাস পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের সময়। শুধু গ্যাস নয়, তেলও পাওয়া গেছে। আসলে আল্লাহ জানে বিএনপির হাতে গেলে এগুলো নয় ছয় করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নৌকায় মার্কা যখন সরকারে এসেছে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। যাদের নৌকা মার্কা দেওয়া হয়েছে তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার আহবান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হবে। মানুষ পোড়ানোর মতো এত সাহস তারা কোথা থেকে পায়। মনে রাখতে হবে, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে সেই আগুনেই হাত পোড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার আছে মানেই উন্নয়ন আছে। আমার হারাবার কিছু নেই। সব হারিয়ে নিজের সন্তানদের দূরে সরিয়ে দেশে এসেছিলাম, এই দেশের মানুষের জন্য। যারা লুটেরা খুনি তারাই মানুষ পোড়ায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার পরিবার। সেই পরিবার নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষ বারবার নৌকায় ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য আজকের বিশ্বে আমরা মর্যাদা পেয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মূল্যস্ফীতি অনেক কমে এসেছে। দেশে খাদ্যের কষ্ট কখনো হবে না। কারণ খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। মোবাইল ফোন কারো হাতে ছিল না। ৯৬ সালে আমরা তা নিয়ে এসেছি, সহজলভ্য করেছি। আজকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ। ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে মানুষ। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সিলেট আমাদের সঙ্গে আছে।
বেলা ১১টার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শেখ হাসিনা সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছান। শেখ হাসিনা গাড়িবহর নিয়ে বিমানবন্দর থেকে হজরত শাহজালালের (রা.) মাজার জিয়ারত করেন। সেখান থেকে তিনি যান হজরত শাহপরানের (র.) মাজার জিয়ারত করতে। আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে রয়েছেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা।






