১ হাজার ৩২১ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস
টুইট ডেস্ক : কক্সবাজার ও বান্দরবানের সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথ (আইস)সহ মাদকপাচার বন্ধ হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অভিযান ও বিজিবির নজরদারি এড়িয়ে বড় পরিমাণ মাদক দেশে প্রবেশ করছে।
বিজিবি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যার মধ্যে ৮৪ কিলোমিটার নাফ নদীর জলসীমানা। দুর্গম এসব এলাকায় ইয়াবা, আইসের পাশাপাশি অস্ত্র-গোলাবারুদ পাচার হচ্ছে। যদিও কিছু চালান ধরা পড়ছে, অধিকাংশই সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হচ্ছে। মাদক ও অস্ত্র পাচারে নারী ও তরুণদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
গত ২৮ জুলাই রামুর ৩০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা গোয়ালিয়া চেকপোস্টে একটি অটোরিকশা থামিয়ে ৩০ লাখ টাকার ১০ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় নাজুমা বেগম (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গা নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ২০ জুলাই টেকনাফের জালিয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা প্রায় এক কেজি আইস ও একটি বিদেশি পিস্তলসহ মো. শফিক (২৬) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে।
বিজিবির পাশাপাশি র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানেও বিভিন্ন সময়ে মাদক জব্দ হয়েছে। তবে সীমান্ত দিয়ে মাদকপাচার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
গত এক বছরে জব্দ করা ১ হাজার ৩২১ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ১১৬ টাকার মাদক ধ্বংস করেছে বিজিবি। বুধবার দুপুরে বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কার্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে বুলডোজার চালিয়ে এসব মাদক ধ্বংস করা হয়। ধ্বংস করা মাদকের মধ্যে রয়েছে:
২ কোটি ৩৩ হাজার ৯৪৯ পিস ইয়াবা
১৪০ কেজি ৪৯ গ্রাম আইস
২৬ কেজি হেরোইন
৫২ কেজি ৮০০ গ্রাম গাঁজা
১৬৯ বোতল ফেনসিডিল
৬১ হাজার ৪৯১ বিয়ার ক্যান
২২ হাজার ১৫৫ বোতল বিদেশি মদ
১ হাজার ৮০০ লিটার বাংলা মদ
৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪২ প্যাকেট সিগারেট
৫৪০ কৌটা বার্মিজ জর্দা, ৪ কেজি ৪০৫ গ্রাম কোকেন, ২ বোতল হুইস্কি, ১৯২ ক্যান কমান্ডো এনার্জি ড্রিংক
বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আকসার খান বলেন, “বিজিবি সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নির্মূলে কাজ করছে। বিপুল পরিমাণ মাদক, অস্ত্র ও চোরাইপণ্যসহ কারবারি গ্রেপ্তার হলেও চোরাচালান পুরোপুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”