নাটোরে যুবলীগ নেতা হত্যায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোরের লালপুরের যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আসামীদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক মোহাঃ মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসলাম সরকার জানান, ২০১৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সাজার রায় হয়। এর জের ধরে নাটোরের লালপুর উপজেলার কদম চিলার গ্রামের ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুলের বাড়িতে হামলা চালায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা খায়রুলকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।

এছাড়াও তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও পেট্রোল ঢেলে নিহত ও তার চাচা আব্দুল জলিলের বাড়িতে আগুন দেয় এবং বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এছাড়াও বাধা দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল জলিলের স্ত্রী মাজেদা বেগমকে কুপিয়ে জখম করে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে নিহতের ভাই শাহীনুর রহমান মামলা করেন। মামলায় ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ১৩ জন আদালতে হাজির ছিলেন না। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, পুকুর পাড়া চিলান গ্রামের করিম, মতি সরদার, মকলেছ সরদার, মহসিন, খলিল, রানা, আনিসুর, রাজ্জাক, জার্জিস, কালাম, মিজানুর রহমান, সানা ও কদিম চিলান গ্রামের আকুল কালাম আজাদ।

এরা সবাই জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের মধ্যে মহসিন নাটোর জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এবং তার পিতা মকলেছ সরদার কদম চিলান ইউনিয়ন জামায়াতের বর্তমার আমীর।

আসলাম সরকার বলেন, রায় ঘোষণার সময় নিহত খাইরুলের স্ত্রী লিপি খাতুন ও তার তিন সন্তান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময় নিহত খাইরুলের স্ত্রী লিপি খাতুন তিন মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিলেন। এছাড়া তার দুই সন্তান তখন স্কুলে পড়তো। বিষয়টি জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাইরুলের স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র খুলে দেন। এর মুনাফা দিয়ে তাঁদের সংসার চলে।