জনস্বার্থে পুলিশের ৯ পরিদর্শক অবসরে

জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা

টুইট ডেস্ক:  জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে পুলিশের ৯ জন পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জুলাই আন্দোলনে তাদের বিতর্কিত ভূমিকা ও ছাত্র–জনতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

রোববার (১০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এসব কর্মকর্তাদের ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন। যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

অবসরে পাঠানো ৯ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন—মো. কামাল হোসেন – নৌ-পুলিশ, যমুনা সেতু-পূর্ব নৌ ফাঁড়ি, নুরুল ইসলাম – সিআইডি, মৌলভীবাজার, আবু বকর সিদ্দিক – মধুপুর সার্কেল অফিস, টাঙ্গাইল, মামুন অর রশিদ – পর্যটন পুলিশ, মুন্সিগঞ্জ ও পদ্মা সেতু জোন, এস এম কামরুজ্জামান – রিজার্ভ অফিস, নারায়ণগঞ্জ, আব্দুল কুদ্দুস ফকির – সিআইডি, নরসিংদী, শিকদার শামীম হোসেন – এপিবিএন-৪, বগুড়া, আব্দুল লতিফ – সিআইডি কন্ট্রোল রুম, মো. সেলিমুজ্জামান – কুলাউড়া রেলওয়ে থানা।

গত বছরের জুলাই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম বড় গণআন্দোলন। এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দিয়ে, যা পরে সরকারবিরোধী ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। পরবর্তী সময়ে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যার অন্যতম অঙ্গীকার ছিল রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা।

এই প্রেক্ষাপটে আন্দোলন চলাকালে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জনস্বার্থ ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এই অবসর একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

তবে পুলিশ বাহিনীর ভেতরে একাধিক শূন্যপদ থাকায় এই পদক্ষেপের ফলে নেতৃত্ব সংকট আরও তীব্র হতে পারে। বর্তমানে পুলিশের বিভিন্ন শীর্ষ পদে ৪০০-এরও বেশি পদ শূন্য রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অপরাধ দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন করে দক্ষ জনবল নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে।

জুলাই আন্দোলনের পর থেকে প্রশাসন যেভাবে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, এই অবসর তারই একটি অংশ। তবে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ভবিষ্যতে সরকার কেমন পদক্ষেপ নেয়, তা নজরে রাখছে সাধারণ মানুষ।