সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের আশ্বাস দিলেন তারেক রহমান

তারেক রহমানের সঙ্গে সমমনাদের বৈঠক: সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে বিএনপি

টুইট ডেস্ক: আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রমজানের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ঘোষণার পর থেকে বিএনপি তার মিত্রদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক শুরু করেছে।

শনিবার (০৯ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৮টি দলের নেতা অংশ নেন। বৈঠকে নির্বাচনের পাশাপাশি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন,

“আমরা যারা বিগত দিনে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম, জনগণের ভোটে যদি বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে, তাহলে সবাইকে নিয়েই জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।”

তিনি আগাম নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করেন এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনের বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন বক্তব্য ও বিবৃতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বিভিন্ন সময়সূচীতে ১৮টি দল ও জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য দলগুলো হল—জন অধিকার, পিপলস পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, আমজনতা দল, গণফোরাম, এনডিএম, গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণতন্ত্র মঞ্চ ইত্যাদি।

তারেক রহমান এসব দল ও জোটকে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,

“যার যার অবস্থান থেকে সর্বশক্তি নিয়ে এখন মাঠে নামতে হবে। ৩১ দফাকে জনগণের সামনে নিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনে এটিই জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি।”

দলের অন্য নেতাদের বক্তব্য

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ জানান, তারেক রহমান সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

“ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমরা যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, তেমনই ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কেউ যেন ঐক্য ভাঙতে না পারে।”

এনডিএম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে হবে। কেউ যেন নির্বাচনে এমন বক্তব্য না দেয়, যা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।”

নির্বাচনী প্রস্তুতি ও আসন বণ্টন

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সমমনা দল ও জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সময় তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করার অনুরোধ করা হয়। তবে আসন বণ্টন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। তারেক রহমান বলেন,

“নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিল, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যবদ্ধ ছিল, আগামী দিনেও তারা যেন একত্রে থাকে।”

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন,” এখন ফাটল দেখা যাচ্ছে দলগুলোর মধ্যে, যা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আমাদের সবাইকে একতা বজায় রেখে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার পথে এগোতে হবে।”

বিএনপি চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার দলের নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল সমমনা দল ও জোটকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচন সফল করতে এবং গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তারা সবাইকে একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে নির্বাচনের বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যবদ্ধ দলগুলো আশা প্রকাশ করেছে, এই জাতীয় ঐক্য দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নতুন দিকনির্দেশনা আনবে।