যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচন করবে বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায় বিএনপি। প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোটও গঠন করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনের অংশীদার, তাদের নিয়েই আমরা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। এখনো কোনো জোট গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও, ভবিষ্যতে জোট হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দক্ষিণপন্থী বা উত্তরপন্থী নই— আমরা বাংলাদেশপন্থী। মধ্যপন্থায় বিশ্বাস করি। যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে রাজনীতি করে, তাদের সবার সঙ্গে আমরা কথা বলছি। আদর্শিক মতভেদ থাকলেও, জাতীয় স্বার্থে এক টেবিলে বসার মতো পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।”

বিএনপির এই নেতা জানান, ইসলামপন্থী দলগুলো বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কিছু না করা এবং সব দলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে বিএনপি।

তিনি বলেন, “আমরা একটি জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে চাই, যেখানে বড় দল হিসেবে বিএনপির একটি দায়িত্ব রয়েছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ খোঁজা।”

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠিকে দেশের সাম্প্রতিক সময়ের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, “নির্বাচন কমিশন এই চিঠির অপেক্ষায় ছিল। জাতিও অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে প্রধান উপদেষ্টা সন্তুষ্ট হয়ে এই চিঠি দিয়েছেন, যা একটি বড় অগ্রগতি।”

তিনি জানান, এই চিঠি পাঠানোর আগে সরকারের সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চেয়েছিলেন উপদেষ্টা। সেটি এখন দৃশ্যমান হওয়ায় বিএনপিও সন্তুষ্ট। আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সংবিধান সংশোধন ছাড়া যেসব সংস্কার এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নির্বাচনের আগে কার্যকর করতে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই।”

সরকারের এক বছরের কার্যক্রম মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও বড় ব্যর্থতা রয়েছে।”

তিনি নির্বাচন কমিশনে প্রধান উপদেষ্টার চিঠিকে ভোট আয়োজনের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেন এবং বলেন, “আমরা এখন জুলাই জাতীয় সনদ তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি।”