নির্বাচন ছাড়া দেশের অগ্রগতি থেমে যাবে: রাজশাহীতে মেজর হাফিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক: পতিত সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। বিএনপি’র হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। লক্ষ লক্ষ মামলা দিয়েছিলো। সেইসাথে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। এখনো সে সকল মামলায় প্রতিদিন হাজিরা দিতে হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ ছাড় দেন, কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেননা। পতিত সরকার নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেছিলো। জনগণের স্বাধীনতা হরন করেছিলো। বাকশাল কায়েম করে একনায়কতন্ত্র শুরু করেছিলো। আল্লাহ ছাড় দেন, কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেন না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ৫আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র- জনতার বিজয়ের বর্ষপুতি পালন উপলক্ষে বিজয় র্যালি পূর্ব সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মেজর হাফিজ উদ্দিন (বীরবিক্রম) প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সকল কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। এতে তিনি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা রেখেছেন। কিন্তু একটি দল যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধীতা করেছিলেন। তারা এবং সাতদিনের একটি দল নির্বাচন তারা চায়না। তারা চায় সংস্কার ও পতিত সরকারের সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য দোসরদের বিচার ও স্থানীয় নির্বাচন। প্রকৃত পক্ষে তারা জানে নির্বাচন হলে একটি আসনও তারা পাবেনা। এখন তারা দেশের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে। ইচ্ছামত চাঁদাবাজী করছে। যাকে তাকে হুমকী দিতে পারছে। এই আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত হবে বলে নির্বাচন তারা চায়না। কিন্তু নির্বাচিত সরকার দেশে না থাকলে কখনো উন্নয়ন হয়না। সে জন্য যেকোন মূল্যে দেশে নির্বাচন প্রয়োজন। এই নির্বাচনে যে দলকে জনগণ ভোট দেবে, সে দলই দেশ পরিচালনা করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, শোষন, নিপিড়ন ও বঞ্চনা থেকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে বাঁচাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো। আর এই যুদ্ধের ঘোষনা দিয়েছিলেন বিএনপি’র চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু ফ্যাসিসস্ট হাসিনা আবারও সেই গণতন্ত্র বিনষ্ট করেছিলো। দেশে অরাজকতার সৃষ্টি করেছিলো। এ থেকে মুক্তি পেতে বিএনপি দীর্ঘ সতের বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৩৬ জুলাইয়ের আন্দোলন। এই আন্দোলনে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। কিন্তু যাওয়ার আগে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে। সেইসাথে প্রায় বিশ হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে গুরুতর আহত করে। তারা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই সব কিছুর বিচার করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্য শেষে রাজশাহী মহানগলীর আলুপট্টির মোড় থেকে বিজয় র্যালি বের করা হয। র্যালি নিয়ে নেতাকর্মীরা নগীরর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাটার মোড়ে গিয়ে শেষ করেন। এসময়ে তারা নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টি মোড়ে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত খালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য দেবাশীষ রায় মধু ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া বিএনপি’ আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক, ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, শফিকুল ইসলাম শাফিক, জেলা বিএনপি’র সদস্য মোহাম্মদ মহসিন ও গোলাম মোস্তাফা মামুন ।
এছাড়াও রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান লিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরফিন কনক, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, সাধারণ সম্পাদক রোমেনা হোসেন, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদ অধ্যক্ষ সকিনা খাতুন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকিসসহ রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকগণ উপস্থিত ছিলেন।