শেখ হাসিনাকে ফেরত ও সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে জাগপার হুঁশিয়ারি
দাবি না মানলে ভারতীয় দূতাবাসকে লাল কার্ড দেখানো হবে: রাশেদ প্রধান
টুইট ডেস্ক: জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত ভারতবিরোধী কর্মসূচিতে ভারতীয় আগ্রাসন এবং শেখ হাসিনার আশ্রয়দানের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান। তিনি বলেন, “আজ ভারতীয় দূতাবাসকে হলুদ কার্ড দেখাচ্ছি, আমাদের দাবি না মানলে পরবর্তীতে লাল কার্ড দেখানো হবে।”
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় রাশেদ প্রধান এ মন্তব্য করেন। সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দুস্তান রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেখ হাসিনাকে এক বছর ধরে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
তিনি বলেন, “গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার বিচার দেখতে হাজারো শহীদ পরিবার ও ‘জুলাই যোদ্ধা’ আজও অপেক্ষা করছে। তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”
তিনি বলেন, ভারত সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, অবৈধভাবে পুশ-ইন বন্ধ করতে হবে, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে, দখলকৃত জমি ফেরত দিতে হবে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও দাদাগিরি বন্ধ করতে হবে।
রাশেদ প্রধান আরও বলেন, “আমার দেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ বাহিনী এবং সচিবালয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে হিন্দুস্তানি কর্মকর্তা ও ‘র’ এর এজেন্ট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এখনো বহাল তবিয়তে সক্রিয় রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা হিন্দুস্তানকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সময় থাকতে সকল হিন্দুস্তানি কর্মকর্তা বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে দেশের জনগণ অশান্ত হলে আরেকটি ৫ আগস্টের মতো গণঅভ্যুত্থান হবে। মনে রাখতে হবে, ৫ আগস্ট শুধু শেখ হাসিনার পতনের দিন নয়, হিন্দুস্তানেরও পরাজয়ের দিন।”
তিনি ভারতকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমাদের দেশের ভোটের ফলাফল বাংলাদেশেই নির্ধারিত হবে, দিল্লিতে নয়। প্রতিবেশী হয়ে আচরণ করুন, প্রভু হবার চেষ্টা করবেন না। শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে ভারতের অখণ্ড ভারতের স্বপ্নও চূর্ণ হয়েছে। আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদ আর চলবে না। আজ হলুদ কার্ড দেখাচ্ছি, আগামীতে লাল কার্ড দেখানো হবে।”
এর আগে মেরুল বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে যাত্রা শুরু করে জাগপার মিছিল। মিছিলটি গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। সেখানে তাৎক্ষণিক পথসভায় বক্তব্য দেন জাগপার নেতারা।
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, মো. নিজামদ্দিন অমিত, ভিপি মুজিবুর রহমান, মো. শামীম আক্তার পাইলট, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম এবং জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী।
জাগপার এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশের কড়া নজরদারিতে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।