থানচিতে সেতু নেই, বর্ষায় বিচ্ছিন্ন তিন পাড়া
রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান: বান্দরবানের থানচি উপজেলার মেকহা, মায়ারাম ও হানারাম — এই তিনটি পাহাড়ি পাড়া যেন বর্ষা এলেই পুরো বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এক সময় যেখানে কাদামাটির পথে চলতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সেখানে এখন পাকা কার্পেটিং সড়ক হলেও একটি সেতুর অভাব আজও দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে রয়ে গেছে।
এই তিনটি পাড়ার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি ঝিড়ি ‘ক্যৌউক্ষ্যং’ বর্ষায় রুদ্ররূপ ধারণ করে। ঝরনা ও ঢলের পানিতে স্রোত এতটাই বেড়ে যায় যে, পারাপার বন্ধ হয়ে যায় পুরোপুরি। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, অসুস্থ রোগী ও বৃদ্ধরা।
স্থানীয় শিক্ষার্থী রিপন মারমা বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে আমরা হেঁটে স্কুলে যাই। কিন্তু বর্ষায় ঝিড়ির পানির স্রোত এত তীব্র হয় যে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না। পরীক্ষাও মিস করতে হয়।”
এই পথ ব্যবহার করেন প্রতিদিন শতাধিক মানুষ। স্কুল-কলেজ, কৃষিপণ্য বাজারজাত, চিকিৎসা সেবা—সবকিছুই আটকে যায় স্রোতের মুখে। কোনো গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হাঁটাও হয়ে ওঠে বিপজ্জনক। বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের খুঁটি ধরে কিংবা কাঁধে করে শিশুদের পার করানো হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মো. আবু হানিফ বলেন, “মেকহা বা রর্বাট পাড়ার ঝিড়িতে সেতুর চাহিদা সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। প্রকল্পের আওতায় সম্ভাব্যতা যাচাইও হয়েছে। তবে কাজ শুরু হতে কিছুটা সময় লাগবে।”
একটি সেতু শুধু কাঠামো নয়, এটি হতে পারে একটি অঞ্চলের জীবনরেখা। এই তিনটি পাড়ার শিশুদের ভবিষ্যৎ, কৃষকের জীবিকা, রোগীর চিকিৎসা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনের জন্য ক্যৌউক্ষ্যং ঝিড়ির ওপর একটি সেতু এখন সময়ের দাবি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে — এমনটাই আশা স্থানীয়দের।