ইরান-পাকিস্তান উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সেনাপ্রধান আসিম মুনির

  • ইসলামাবাদে ইরান-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, উপস্থিত ছিলেন পাক সেনাপ্রধান ও ডিজি আইএসআই।
  • ইসলামাবাদে ইরান-পাকিস্তান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক: দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে সম্মিলিত বার্তা।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মাসৌদ পেজেশকিয়ান ইসলামাবাদ সফরে এসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শেহবাজ শরিফ–এর সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
বৈঠকটি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

বিশেষ দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, এই বৈঠকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান (COAS) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও আইএসআই-এর মহাপরিচালক (DG ISI) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আসিম মালিক সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে যে, বৈঠকে নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে।

সীমান্ত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা

বৈঠকে ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি, জঙ্গি তৎপরতা এবং উভয়পক্ষের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ ও উত্তেজনা বাড়ায় এ ইস্যু অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে।

অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক

দুই দেশই পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে। ইরান থেকে জ্বালানি আমদানি, সীমান্তবর্তী বাজার ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং চাবাহার ও গওয়াদর বন্দর সংযোগ সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রসঙ্গ

আফগানিস্তান পরিস্থিতি, কাশ্মীর ইস্যু এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনা সম্পর্কেও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় হয়।
এছাড়া চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) প্রকল্পে ইরানের অংশগ্রহণ সম্ভাবনাও উঠে আসে আলোচনায়।

সেনাবাহিনীর সরাসরি সম্পৃক্ততা

সাধারণত রাজনৈতিক পর্যায়ের বৈঠকে সামরিক শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ বিরল হলেও এই বৈঠকে সেনাপ্রধান ও আইএসআই প্রধানের উপস্থিতি এটিকে নিরাপত্তাভিত্তিক উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত আলোচনার পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এর ফলে বোঝা যাচ্ছে, পাকিস্তান চায় ইরানের সঙ্গে যৌথ নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলতে এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম মোকাবেলায় ঘনিষ্ঠ সমন্বয় নিশ্চিত করতে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক শুধু দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা কাঠামোতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এবং আফগানিস্তানে তালেবান-পরবর্তী স্থিতিশীলতার প্রশ্নে পাকিস্তান ও ইরানের কৌশলগত সমন্বয় দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।