চট্টগ্রামে গেস্ট হাউজে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার: প্রাথমিকভাবে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধারণা

টুইট প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম ক্লাব লিমিটেডের গেস্টহাউজ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান ও বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন-অর-রশিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম জানান, ক্লাবের গেস্টহাউজের ৩য় তলার ৩০৮ নম্বর রুমে গতকাল (৩ আগস্ট) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে তিনি অবস্থান নেন। সকালে তার একটি মিটিং ছিল। তবে দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে সাড়া না মেলায় ও দরজা না খোলায় সংশ্লিষ্টরা সন্দেহে গ্লাসের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তাকে বিছানায় নিথর অবস্থায় দেখতে পান।

পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) চট্টগ্রামের একটি চিকিৎসক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। তবে মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই বলে পুলিশ জানিয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে এবং পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত করা হবে।

ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী, সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিটসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন হারুন-অর-রশীদ। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।

২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০০২ সালের জুনে অবসরে যান। পরবর্তীতে তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশীদ ২০০৬ সালে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট পদে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক ব্যবসায়িক প্রসার ঘটালেও, ২০১২ সালে জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।

রাজনৈতিক ও সামাজিক যোগাযোগ

মৃত্যুর দিন বিকেলে তিনি তার মামা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও সাখাওয়াত হোসেনের বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাবেক সেনাপ্রধানের মৃত্যুতে রাজনৈতিক, সামরিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।