তারেক রহমানের ডাকে রাজপথে ছাত্রদল

ছাত্রদলকে কেউ রুখতে পারবে না: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ছাত্রসমাবেশে হুঙ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ৩ আগস্ট বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি” উপলক্ষে এক ছাত্রসমাবেশ। অনুষ্ঠানটি কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত ও এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। শাহবাগ মোড় থেকে টিএসসি, মৎস্য ভবন, কাঁটাবন ও চারুকলা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়ে।

রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশে দেখা গেছে বিপুল জনসমাগম। সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। শাহবাগ মোড় থেকে টিএসসি, কাঁটাবন, চারুকলা ইনস্টিটিউট পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে ছিল ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। কারও কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকা, কেউ দলীয় পতাকা হাতে, আবার কেউ স্লোগানে মুখর—সমাবেশস্থল পরিণত হয় জনসমুদ্রে। টিএসসির দিকে মুখ করে নির্মিত মঞ্চের সামনে জমায়েত হন হাজারো নেতাকর্মী। ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’, ‘মা-মাটি ডাকছে’, ‘ছাত্রদলকে রোখা যাবে না’—এমন সব স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শাহবাগ চত্বর। পুরো এলাকা ছিল উজ্জীবিত, একাত্মতার শক্তিতে ভরপুর।

ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলবে ছাত্রদল

সমাবেশে বক্তব্যে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “দেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায়, ছাত্রদল চাইলে সেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে পারে।” তিনি বলেন, “ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান যদি নির্দেশ দেন, সারাদেশ একযোগে অবরোধে মুখর হবে।”

হেলমেট বাহিনীর রাজনীতির অবসান: এ্যানী

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, “জুলাই আন্দোলন এই দেশে হেলমেট বাহিনীর (ছাত্রলীগ) রাজনীতি চলতে পারে না বলে প্রমাণ করেছে। শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট সরকারকেও এর মুখোমুখি হতে হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আয়নাঘর আমরা ধ্বংস করেছি। এখন সময় শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করার।”

নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “তরুণদের স্বপ্নই আমাদের শক্তি। তারা আজ রাজপথে, এটা নতুন বাংলাদেশ গড়ার বার্তা।” তিনি আরও বলেন, “শুধু আন্দোলন নয়, ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শেখ হাসিনা যদি ফের ক্ষমতায় আসে, গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে যাবে।”

বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। যারা আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই।”

তারেক রহমানের ভার্চুয়াল বার্তা

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, “আন্দোলনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। ছাত্রদল হচ্ছে পরিবর্তনের অগ্রভাগ। এই সমাবেশ গণজাগরণে পরিণত হোক, এমনটাই প্রত্যাশা।”

ছাত্রদল কর্মীদের বিপুল উপস্থিতি

ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার ও পোস্টার হাতে সমাবেশস্থলে সমবেত হন। স্লোগানে মুখর ছিল সমাবেশ এলাকা—‘তারেক রহমান আসছে’, ‘মা-মাটি-মানুষের শক্তি, ছাত্রদলের ঐক্য’ ইত্যাদি।

এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে ছাত্রদল তাদের রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং রাজপথে উপস্থিতি আবারও দৃঢ়ভাবে প্রমাণ করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই কর্মসূচি বিএনপির আসন্ন রাজনৈতিক পরিকল্পনার ইঙ্গিত বহন করছে।