রংপুরে সাম্প্রদায়িক হামলায় সাংবাদিকের উস্কানি, পাঠানো হলো কারাগারে
রংপুরে হিন্দু পল্লীতে হামলায় উস্কানির অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেপ্তার
আব্দুল্লাহিল মতিন শাহীন, রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাতপুরের হিন্দু পল্লীতে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় উস্কানির অভিযোগে হাবিবুর রহমান সেলিম (৪৫) নামে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি রংপুর থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার পাগলাপীর প্রতিনিধি ছিলেন।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর চওড়াপাড়া এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় হাবিবুর রহমান সেলিমকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং আলদাতপুর ছয়আনি হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, “হামলার সময় অভিযুক্ত সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং হামলাকারীদের সরাসরি উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অডিও ও ভিডিও ফুটেজসহ একাধিক তথ্য-প্রমাণ উদ্ধার করা হয়েছে।”
তদন্তে উঠে এসেছে, সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও হামলাকারীদের উৎসাহিত করেন। এ ঘটনায় তাঁর ভূমিকা ছিল সক্রিয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত—এমন দাবি তদন্তকারীদের।
রবিবার সকালে হাবিবুর রহমান সেলিমকে রংপুরের বিচারিক আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে তাঁকে মামলার আসামি হিসেবে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হতে পারে বলে সূত্র জানায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হামলার নেপথ্যের আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। একইসঙ্গে যেসব ব্যক্তি হামলায় অংশ নিয়েছিল বা সহায়তা করেছিল, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে।
আলদাতপুরের এই হিন্দু পল্লীতে সম্প্রতি একাধিক বাড়ি ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়। ঘটনাটিকে ঘিরে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ইতোমধ্যে একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিকতা যেমন সত্য উদঘাটনের দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করার পেশা, তেমনি এই পেশার আড়ালে কেউ যদি উস্কানিমূলক কাজ করে, তাহলে সেটি আইন ও নীতিগতভাবে গুরুতর অপরাধ। এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হলো—মিথ্যাচার, উস্কানি ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের কোনো পেশাগত পরিচয়ই রক্ষাকবচ হবে না।