তিন দশক পর রাকসু নির্বাচন ১৫ সেপ্টেম্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : তিন দশকেরও বেশি সময় পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিরে পাচ্ছেন তাঁদের সাংগঠনিক অধিকার ও প্রতিনিধিত্বের সুযোগ। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। রোববার (২৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রশাসন।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাকসু নির্বাচনের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই। তাঁদের মতে, এটি কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং গণতান্ত্রিক চর্চা ও নেতৃত্ব বিকাশের নতুন পথচলা।
রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে। একসময় এটি শিক্ষার্থীদের একমাত্র সাংগঠনিক প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। তবে ১৯৮৯ সালের পর রাজনৈতিক সহিংসতা, দলীয় কোন্দল ও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে রাকসু নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া বলেন, “রাকসু না থাকায় হলে, ক্লাসে কিংবা নানা সমস্যায় কেউ আমাদের পক্ষে কথা বলত না। কোনো অভিযোগের জায়গা ছিল না। এখন আবার আমাদের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে, যেখানে প্রতিনিধিরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, রাকসু নির্বাচন আয়োজনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত হচ্ছে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা, মনোনয়ন প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা এবং নির্বাচনী প্রচার-সংক্রান্ত কাঠামো।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, “এবারের রাকসু নির্বাচন কমিশন হবে নিরপেক্ষ ও শক্ত অবস্থানে। আমরা কোনো পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হব না। এটি শেখ হাসিনার নির্বাচন নয়, এটি শিক্ষার্থীদের নির্বাচন।”
তিন দশক পরে ফিরে আসছে রাকসু—শিক্ষার্থীদের জন্য এটি কেবল প্রতিনিধি নির্বাচন নয়, বরং আত্মপরিচয় ফিরে পাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকও বটে।