জামায়াতে ইসলামী নারীদের আসনে সংরক্ষণের পক্ষে, আইনি ভিত্তি চায়

টুইট ডেস্ক : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের চলমান সংলাপের মধ্যবর্তী বিরতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাইয়েদ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জামায়াতের নারীদের আসন ও আইনি ভিত্তি সংক্রান্ত অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।

তাহের বলেন, বর্তমানে আলোচনা নারীদের সংরক্ষিত আসন নিয়ে চলছে এবং জামায়াতসহ সব ইসলামি দল এতে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, “নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষণ পিআর সিস্টেমে ভোটের মাধ্যমে হওয়া উচিত, যাতে নারীরা সম্মানের সঙ্গে নিরাপদ প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।”

তবে দলের মধ্যে কিছু দ্বিমত রয়েছে। তাহের উল্লেখ করেন, “যদি ৫% কোটায় ১০টি দল নারী প্রার্থী দেয়, তাহলে হয়তো নারীরা নির্বাচিত হবেন না, ফলে প্রতিনিধিত্ব বাড়বে না। তাই এমন কাঠামো প্রয়োজন যা নারীদের নিয়মিত জয় নিশ্চিত করবে।”

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বেশ কিছু বিষয়ে দল একমত হলেও কিছু রিজার্ভেশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আকারে দেয়া হয়েছে। জামায়াত চায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে আইনি কাঠামো তৈরি করতে হবে, কারণ “কেউ বলছে আগামী সংসদে গিয়ে আইন হবে, যা অবাস্তব এবং অসামাজিক।”

আইনি ভিত্তি তৈরির জন্য প্যানেল অব লইয়ার্সের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, এই আইনি কাঠামো নির্বাচনের আগে প্রয়োগযোগ্য হবে এবং প্রধান উপদেষ্টা এটি ঘোষণা করবেন। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সময়ের উদাহরণ দেন।

তাহের বলেন, “জনগণের অভিপ্রায় সরকারের বৈধতা নির্ধারণ করবে, সুপ্রিম কোর্ট কখনো তা নির্ধারণ করেনি। আমরা চাই সনদ ও প্রোক্লেমেশনকে সাংবিধানিক ঘোষণা করা হোক এবং পরবর্তী সংসদে র‍্যাটিফাই করা হোক।”

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র সম্পর্কে তিনি জানান, খসড়া এখনও অসম্পূর্ণ, তবে শিগগিরই লিখিত জবাব দেয়া হবে। তিনি বলেন, অতীতের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর মতোই এই সনদ ও ঘোষণাপত্রকেও সংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামের কমিটিতে বর্তমানে ৪৩% নারী সদস্য রয়েছে, যা বাধ্যতামূলক ৩৩% ছাড়িয়ে গেছে। তাহের উল্লেখ করেন, “নারী অধিকারের কথা যারা বেশি বলে, তাদের দলে এতজন নারী নেই।”

অবশেষে তিনি জাতীয় ঐকমত্যের চূড়ান্ত আলোচনায় জাতীয় ঐক্য কমিটির প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে সরাসরি মত বিনিময় সম্ভব হয়।