রাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি ঘোষণা, ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে বাতিল হবে প্রার্থিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য আচরণবিধি ঘোষণা করেছে রাকসু নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে এই বিধিমালা প্রকাশ করা হয়।

নির্বাচনী আচরণবিধিতে উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট এলেই প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।

নির্বাচনী বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের নিজে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে। এ সময় পাঁচজনের বেশি সমর্থক সঙ্গে রাখা যাবে না এবং কোনো মিছিল, শোডাউন বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।

প্রচারণা চালানো যাবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত—প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রচারণায় শুধু সাদা-কালো এবং নির্ধারিত মাপ (৬০x৪৫ সেন্টিমিটার) অনুসারে পোস্টার ব্যবহারের অনুমতি থাকবে। ভবনের দেয়ালে পোস্টার লাগানো কিংবা দেয়াল লিখন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

একাডেমিক ভবনের ভেতরে মিছিল, শ্রেণিকক্ষে প্রচারণা, কিংবা হুমকি, বাধা প্রদান, কিংবা কোনো প্রকার মানহানিকর বা উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সভা-সমাবেশ করতে হলে প্রক্টর অফিসের অনুমতি নিতে হবে এবং পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

নির্বাচনী কার্যক্রমে যানবাহন ব্যবহার করে শোডাউন নিষিদ্ধ। ভোটার পরিবহনেও কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না, তবে প্রার্থী ব্যক্তিগত রিকশা বা বাই-সাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন। শুধুমাত্র স্টিকারযুক্ত গাড়ি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি চলাচল করতে পারবে। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং আবাসিক হলে অবস্থান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ভোটারদের নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে শুধু নির্বাচনী কর্মকর্তা, প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট এবং অনুমতিপ্রাপ্তরা প্রবেশ করতে পারবেন। গণমাধ্যমকর্মীরা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে বুথের ভেতরে প্রবেশ কিংবা লাইভ সম্প্রচার নিষিদ্ধ। বুথে মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে অস্ত্র, লাঠি, রড, হকিস্টিক প্রভৃতি বহন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে রিটার্নিং অফিসার সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, প্রার্থিতা বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার অথবা প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতেই এ আচরণবিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে তা মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।”