বান্দরবানে কেএনএফের নিরাপদ অস্ত্রগুদাম শনাক্ত
বান্দরবানে কেএনএফের ঘাঁটিতে মিয়ানমারের সামরিক অস্ত্র! সেনা অভিযানে উদ্ধার একে-৪৭, স্নাইপার রাইফেল।
টুইট ডেস্ক: বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি—এই তিন সীমান্তবর্তী উপজেলায় গড়ে উঠেছে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর শক্তিশালী ঘাঁটি। এসব ঘাঁটি থেকে উদ্ধার হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর ব্যবহৃত একে-৪৭, চাইনিজ রাইফেল, স্নাইপার রাইফেলের গুলি, কমব্যাট ডিভাইসসহ বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্র।
গত ২ জুলাই পাইন্দু ইউনিয়নের কুত্তাঝিরি এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে দুই কেএনএ সদস্য নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭ রাইফেল (স্টিলবাট ভার্সন), একটি চাইনিজ রাইফেল, বিপুল পরিমাণ গুলি ও কার্তুজ। উদ্ধারকৃত একটি রাইফেল ২০২৩ সালে রুমা সোনালী ব্যাংকে কেএনএফের হামলায় লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যেই ছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এসব অস্ত্র বাংলাদেশি বাহিনীর নয়, বরং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর। কেএনএফ মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি’র সঙ্গে যৌথভাবে অস্ত্র কেনাবেচা ও বিনিময় করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, কেএনএফের কাছে স্নাইপার রাইফেল, এম-২২, এম-১৬, গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার, আরপিজি, নাইটভিশন ডিভাইস ও কমিউনিকেশন প্রযুক্তিসহ বিপুল অস্ত্র মজুত রয়েছে।
এছাড়া, কেএনএফ এসব অস্ত্র পাচারের জন্য রোয়াংছড়িকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। মিজোরাম সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে রুমা ও থানচিতে পাঠানো হয় গোপনে। কিছু পাহাড়ি স্থানীয় লোকজন এ কাজে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
থানচি উপজেলার দুর্গম বনাঞ্চলে তৈরি করা হয়েছে নিরাপদ অস্ত্রগুদাম। সেনা নিয়ন্ত্রণবিহীন রেমাক্রি, তিন্দু, মোদক, নাফাখুমসহ বহু স্থানে আরাকান আর্মির ঘাঁটি রয়েছে, যেখান থেকে কেএনএফ অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকে।
গত তিন বছরে সেনাবাহিনী অন্তত ১০টি কেএনএফ ঘাঁটি উচ্ছেদ করলেও সংগঠনটি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে। স্থানীয় ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, কুকি-চিন ও আরাকান আর্মির সম্পর্ক এবং অস্ত্র বিনিময়ের মাধ্যমে সীমান্তে দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হচ্ছে।
সুত্র: ইত্তেফাক