আমেরিকা সন্তুষ্ট না হলে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের’ মতো পরিস্থিতি হতে পারে: রাশিয়া

রাশিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। ছবি: ফাইল ছবি

বিশ্ব ডেস্ক : আমেরিকা সন্তুষ্ট না হলে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্ত’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।

রোববার এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, যদি জনগণের ইচ্ছার ফলাফল আমেরিকার কাছে সন্তোষজনক না হয়, তারপরে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্ত’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত ওয়াশিংটনের শুভবোধের উদয় হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম’। ‘সে কারণেই একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আবারও হস্তক্ষেপ করার আশংকা রয়েছে।’

‘রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাংলাদেশের সরকার গঠনের বিষয়ে দেশের জনগণের সিদ্ধান্তের ওপর জোর দেন’।

তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন ‘আগামী সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে নিষেধাজ্ঞাসহ বিপুল চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে।’

মুখপাত্র যোগ করেন, ‘বাংলাদেশের মূল শিল্পগুলো লক্ষ্যবস্তু হতে পারে এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে বাধা দেয়ার জন্য প্রমাণ ছাড়া অনেক কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হবে’।

বিবৃতিতে মারিয়া জাখারোভা, আবারও বিরোধী দলের আন্দোলনে আমেরিকাসহ পশ্চিমা মিশনগুলোর সম্পর্ক থাকার অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘১২-১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বর্তমান সরকারের বিরোধীরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে, বাস পুড়িয়ে দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আমরা এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনের উস্কানিমূলক কার্যকলাপের মধ্যে সরাসরি সংযোগ দেখতে পাচ্ছি। ‘আমরা ইতোমধ্যে ২২ নভেম্বর আমেরিকান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ব্রিফিং বিষয়ে কথা বলেছি’।

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের শুরু থেকে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বয়ে যাওয়া গণবিপ্লবের ঝড়কে পশ্চিমা সাংবাদিকরা ‘আরব বসন্ত’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।

গণবিক্ষোভের শুরু তিউনিসিয়ায়, এরপর তা মিশরে, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন সহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। প্রথমে মিশরে প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের পতন হয়। পরে লিবিয়ায় মুয়াম্মর আল-গাদ্দাফি জমানার অবসান হয়। আরব বিশ্বের এই গণ অভ্যুত্থান সংঘটনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এর ইউরোপীয় ন্যাটোভুক্ত সহচর রাষ্ট্রগুলো অস্ত্র সরবরাহ করে এবং সরাসরি আঘাত এনে ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রনায়কের পতন ঘটায়।

‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিত স্বৈরাচারবিরোধী তথাকথিত গণ-অভ্যুত্থানের জোয়ার সিরিয়াতেও এসে লাগে ২০১১ সালে। ওই বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ বছরে এই জোয়ারের সুফল না মিললেও এই সময়ে হতাহত হয়েছে বিরাটসংখ্যক জনগোষ্ঠী।