রাজশাহীর বাঘায় স্কুলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘ’র্ষ, আ’হত ২৫

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদীপুর-হেলালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (এমএইচ বালিকা বিদ্যালয়) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৩০ জুলাই ২০২৫) সকাল ১১টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করে, এবং পরে সড়কে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ জানুয়ারি মানববন্ধনসহ লিখিত অভিযোগ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। পরে তিনি দুই মাসের ছুটিতে যান এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ।

বুধবার সকালে আব্দুল খালেক বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকসহ দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে আমানউল্লাহ, আব্দুল খালেক ও আকাশ আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বাঘা ও চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—শিক্ষক জাকির হোসেন, পিয়ন আবু জার, আয়া বানুয়ারা বেগম, শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন এবং স্থানীয় বাসিন্দা রাহাবুল ইসলাম, বজলুর রহমান, সাগর আলী, সম্রাট আলীসহ অনেকে। স্থানীয়দের মতে, দুই পক্ষের হাতে দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, হাতুড়ি ও চাইনিজ কুড়াল ছিল।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বহিরাগতদের নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে অতর্কিত হামলা করেন এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মারধর করেন। তবে চিকিৎসাধীন থাকায় আব্দুল খালেকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ছেলে ফয়সাল আহমেদ দাবি করেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা তার বাবার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ করছেন।

ঘটনার বিষয়ে বাঘা থানার ওসি এএফএম আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে পরিদর্শনকালে ক্লাস চলতে দেখা যায়নি। শিক্ষকরা অফিসে ছিলেন এবং দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, ইতিপূর্বের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।