মামলা রেকর্ডের আগেই অভিযুক্তের হাতে এজাহার, রাজশাহীতে এসআই প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁদাবাজির মামলার এজাহার থানায় রেকর্ড হওয়ার আগেই তা অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার হাতে পৌঁছানোর ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মধ্যে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম রকিবুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এসআই রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ২৩ জুলাই রাতে রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব এমদাদুল হক লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি চাঁদাবাজির মামলার এজাহার আগেভাগেই হোয়াটসঅ্যাপে তার কাছে পাঠান। মামলায় লিমনসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি করেন রাজশাহীর এক ডেভেলপার ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান, যিনি অভিযোগ করেন—লিমন তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার আরও নাটকীয় দিক হলো, লিমন এসআই রকিবুলের সঙ্গে ফোনালাপের ভিডিও রেকর্ড করেন এবং পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শোনা যায়, মামলা রেকর্ডের আগেই বিষয়টি লিমনকে জানাচ্ছেন এসআই রকিবুল। তিনি জানান, এজাহার কমিশনার অফিস থেকে পাঠানো হয়েছে এবং তার মাধ্যমে বাদীর কাছ থেকে তা সংগ্রহ করা হয়েছে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এসআই রকিবুলকে সোমবার (২৮ জুলাই) সরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, এসআই রকিবুলের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। তিনি স্থানীয় অপরাধীচক্রের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং মাঝে মধ্যেই রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এসআই রকিবুল সাংবাদিক পরিচয় শোনার পর ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) গাজিউর রহমান বলেন, “এসআই রকিবুলের আচরণ পুলিশের শৃঙ্খলার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভিডিও এবং আগাম এজাহার পাঠানোর বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রমাণ মিললে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ কমিশনারের অফিস থেকে কোনো মামলার এজাহার পাঠানো হয় না। অভিযোগকারী নিজেই থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দাখিল করেন এবং ওসি সেটি রেকর্ড করেন।”