ইভিএম বোঝে না মানুষ, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল
টুইট ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ এখনো ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) সঠিকভাবে বোঝে না, তারা কীভাবে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতি বুঝবে? তাই এসব নতুন চিন্তা বাস্তবসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপি নেতা শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মরহুম শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ’-এর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “নতুন নতুন চিন্তা আসছে, যেমন পিআর পদ্ধতি। কিন্তু দেশের মানুষ এসব বিষয়ে অভ্যস্ত নয়। যারা ইভিএমে এখনো ঠিকভাবে ভোট দিতে পারে না, তারা পিআর বুঝবে কীভাবে? এসব চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের কিছু রাজনৈতিক দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে অবস্থান নিয়েছে। অথচ এ দেশের মানুষ যে ভোটপ্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত, সেটাই নিশ্চিত করা জরুরি। বহিরাগত চিন্তা দিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেকে বলেন, বিএনপি নাকি সংস্কার চায় না। বাস্তবতা হচ্ছে, সংস্কারের চিন্তা আমাদের থেকেই এসেছে। আমরাই সংস্কারের সূচনা করেছি।”
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে জুলাই সনদ ঘোষণা করা দরকার। সেইসঙ্গে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক করা সময়ের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ফ্যাসিজমের মূল হোতা’ আখ্যায়িত করে বলেন, “১৯৭৫ সালের আগে শেখ মুজিব গণতন্ত্র কবর দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেছিলেন। সেই বাকশাল থেকে বের হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান।”
ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “সংবাদপত্রে দেখলাম, বারোটি মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তনের ব্যাপারে সব দল একমত হয়েছে। এটি ইতিবাচক দিক।”
এছাড়া, শিশু একাডেমি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের প্রতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান শিশুদের বিকাশের কথা চিন্তা করে সবার মতামতের ভিত্তিতে একাডেমিটি স্থাপন করেছিলেন। এটি সরিয়ে নেওয়া ঠিক হবে না।”
সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিষয়টি শুনে আমি বেদনাহত হয়েছি। যদিও এ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য হচ্ছে, বাস্তবতা কিন্তু মর্মান্তিক।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি আজহারুল হক ও ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়াসহ অনেক নেতা। প্রয়াত শফিউল বারীর স্ত্রী বিথিকা বিনতে হোসাইন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি।