রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবীতে দ্বিতীয় দিনেও অবরোধ করে মহাসড়কে ক্লাস করল শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (রবিবি) এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের ৪র্থ দিনের মত আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন ৩ এর সামনে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অবস্থান নেয়।

তখন ম্যানেজমেন্ট, সমাজবিজ্ঞান, বাংলা, সংগীত ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে বসেই আলাদা আলাদা ১২টি ক্লাসের পাঠদান নেয়া হয়। বেলা ১২টা পর্যন্ত চলা ব্যতিক্রম এই আন্দোলনের পাশাপাশি এক পাশে চলে বিক্ষোভ মিছিল। তখন স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে হুশিয়ারী দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় দুই পাশে আটকা পড়ে অগণিত যানবাহন। দুর্ভোগের শিকার যাত্রীরা এ আন্দোলনে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর প্রোক্টর মো: নজরুল ইসলাম ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ ও অভিযোগ তুলে বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর অতিবাহিত হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। ভাড়া ভবনে কোন রকমে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ড চললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে ৫১৯কোটি টাকা প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হলেও একনেকে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। তারা বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নানাভাবে সরকারের সহযোগিতা পাচ্ছে। কি কারনে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। দাবি না মানলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৬শে জুলাই জাতীয় সংসদে পাশ হয় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। তারপর থেকে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাস এখনো হয়নি। এরপর মহাকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাউতারা মৌজার ২৩৫ একর জায়গায় ২০১৮ সালে রবিন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এরপর প্রকল্প সংশোধনের জন্য ৮ বারে সর্বশেষ ২০২৫ সালে ১শত একর ভুমির উপর ৫শত ১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যায় ধরে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। যা একনেকে অনুমোদেনের নিতিগত সিন্ধান্তের পর্যায়ে থাকলেও সিরাজগঞ্জ থেকে পরিদর্শন শেষে ঢাকায় গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এই ভুমিতে স্থাপনা না করার প্রস্তাব দেন। এরপর থেকেই বিক্ষোভে নেমেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দুদিন ধরে তারা ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের বিসিক এলাকায় মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।