আ. লীগের হামলার শঙ্কা, সারা দেশে সতর্কতা

আ. লীগের হামলার আশঙ্কা, ১১ দিনের বিশেষ সতর্কতায় দেশজুড়ে উত্তেজনা।

টু‌ইট ডেস্ক: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সম্ভাব্য সহিংস তৎপরতা ঠেকাতে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও বিশেষ শাখার (SB) গোপন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব ইউনিটকে লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে প্রশাসনসহ রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা ও নানা গুঞ্জন।

বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ ছদ্মবেশে সহিংস কর্মকাণ্ড, গোপন হামলা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতে পারে। তাদের পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, প্রশাসনিক ভবন, গণপরিবহন ও রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা চালানো।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে ‍সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নজরদারি, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন, মোবাইল টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীও উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। এই ১১ দিনকে ঘিরে রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, বন্দর, আদালত ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন,

“আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী এখনো সংঘবদ্ধ। তারা বিভিন্ন অজুহাতে সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। এদের দমন করতে হবে কঠোরভাবে। জনগণের নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকার কোনো ধরনের ছাড় দেবে না।”

অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক মহল একে দেখছে সরকারের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে। তাদের অভিযোগ, এ ধরনের সতর্কতা বাস্তবিক হুমকির চেয়ে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে বিরোধী কণ্ঠরোধের অপকৌশল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যেই নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন, এটি প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, আবার কেউ বলছেন, ‘রাজনৈতিক আতঙ্ক সৃষ্টির নতুন কৌশল’। সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ বাড়লেও সরকার জানিয়েছে, “এটি একটি রুটিন সতর্কতা, যাতে কোনো প্রকার নৈরাজ্য ঠেকানো যায়।”

এই ১১ দিনের বিশেষ সতর্কতার ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এখন দেখার বিষয়, এই সতর্কতা কতটা কার্যকর হয়, নাকি এটি আরও বিভাজন তৈরি করে দেশের রাজনীতিতে।