বান্দরবানে সেনাবাহিনীর ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, চিকিৎসা পেল ১৫৩ জন।

অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান: বান্দরবানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী মানবিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ লংলাইপাড়া আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় একদিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ক্যাম্পটি পরিচালিত হয় বান্দরবান রিজিয়নের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে এবং বান্দরবান সেনা জোনের সার্বিক সহযোগিতায়। এই কর্মসূচি ছিল জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে আয়োজনকৃত একটি বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইন।

ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন দূর-দূরান্তের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ও গহীন অরণ্যের পাড়াগুলো থেকে আগত মোট ১৫৩ জন রোগী। এদের মধ্যে ছিলেন ৬৫ জন পুরুষ, ৫৮ জন নারী এবং ৩০ জন শিশু।

চিকিৎসকরা বিভিন্ন চর্মরোগ, দাঁতের সমস্যা, গাইনোকলজিক্যাল জটিলতা, শিশুস্বাস্থ্য ও সাধারণ শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, স্বাস্থ্য পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদান করেন।

ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন রোয়াংছড়ি সাব-জোনের কমান্ডার মেজর এম. এম. ইয়াসিন আজিজ। তাঁর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসকরা অত্যন্ত পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেন।

ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন লংলাইপাড়া আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা, যারা দক্ষতা ও দায়িত্ববোধের সাথে পুরো কার্যক্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিচালনা করেন।

মেডিকেল ক্যাম্পের প্রধান অতিথি মেজর ইয়াসিন আজিজ বলেন:

> “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু নিরাপত্তা নয়, বরং প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের পাশে থেকে মৌলিক চাহিদা পূরণে সদা প্রস্তুত। এই মেডিকেল ক্যাম্প তার বাস্তব প্রতিফলন। আমরা বিশ্বাস করি, মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমেই সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ভবিষ্যতেও এই ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

 

চিকিৎসা নিতে আসা লালমাই মারমা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন:

“অনেকদিন ধরে শরীর খারাপ ছিল, কিন্তু এত ভিতরে এসে চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ ছিল না। সেনাবাহিনী ওষুধসহ চিকিৎসা দিয়েছে, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় বিষয়। সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা আরও বেড়ে গেল।”

এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলের সাধারণ মানুষ সরাসরি আধুনিক চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছেন। ফলে সেনাবাহিনীর প্রতি স্থানীয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন আরও মজবুত হয়েছে।

বান্দরবান রিজিয়ন ও সেনা জোন ভবিষ্যতেও এই ধরণের মানবিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে বলে অঙ্গীকার করেছে।