তিন পার্বত্য জেলা হবে বাংলাদেশের কাজুবাদাম ও কফির ‘হব’ – উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
পাঁচ লাখ হেক্টর অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানির স্বপ্ন।
অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান: তিন পার্বত্য জেলা — রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িকে “বাংলাদেশের কাজুবাদাম ও কফির জেলা” হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি বলেন, “সিলেটকে যেমন আমরা চা-পাতার জেলা বলি, ঠিক তেমনিভাবে একদিন তিন পার্বত্য জেলা পরিচিত হবে কাজুবাদাম ও কফির জেলা হিসেবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্বত্য অঞ্চলের অনাবাদি জমি, আবহাওয়া ও পরিবেশ এই দুটি অর্থকরী ফসলের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে দেশে প্রায় ৯৫% কাজুবাদাম আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয় এবং প্রতি বছর ৬০০ কোটি টাকার কফি বাজারজাত হয়। সরকার এরমধ্যেই শুরু করেছে ব্যাপকভিত্তিক চাষ প্রকল্প ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
চাষ বৃদ্ধি ও প্রকল্প
২০২১ সালে শুরু হওয়া ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের’ আওতায় ১৯টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ১৫৮ কোটি টাকার কার্যক্রম চলমান। শুধু বান্দরবান জেলাতেই কাজুবাদাম চাষ ৮০০ হেক্টর থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,০০০ হেক্টরে, এবং কফির চাষ ৪০০ হেক্টর থেকে বেড়ে হয়েছে ১,০০০ হেক্টর।
রপ্তানি ও কর্মসংস্থান সম্ভাবনা
দেশে বর্তমানে ২২টি প্রক্রিয়াজাত কারখানা কাজ করছে, যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে প্রায় ৩২০০ মানুষের। বিএসআরএম ও কাজী গ্রুপের মতো বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান রপ্তানিমুখী প্রসেসিং কারখানা নির্মাণে বিনিয়োগ করছে ২৫০ কোটি টাকার মতো।
প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রকল্পের সফলতার পথে অন্যতম বাধা হলো লোকবল সংকট ও ঋণপ্রাপ্তির সমস্যা। ২ হাজার বাগান রক্ষণাবেক্ষণে মাঠে আছেন মাত্র ৬ জন অপ্রশিক্ষিত সংগঠক। কৃষকরা এখনো সহজে ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ পাচ্ছেন না, যা বড় প্রতিবন্ধকতা বলে জানান ‘কিষান ঘর’ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মোঃ তারিকুল ইসলাম।
এমনকি লোকবলের অভাবে প্রকল্প বাজেটের ২০ কোটি টাকা ফেরতও দিতে হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, সময়মতো সরকারি সহায়তা পেলে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির পথ সুগম হবে।