ইটালির ‘গারিসেনদা জোড়া টাওয়ার’ ধসের ঝুঁকিতে
বিশ্ব ডেস্ক : ইটালির বোলনিয়ার “গারিসেনদা জোড়া টাওয়ার” ঝুঁকে থাকা সত্ত্বেও প্রায় এক হাজার বছর ধরে টিকে আছে। নভেম্বরে তদন্তের পর জানা গেছে, ১২ শতকে নির্মিত জোড়া টাওয়ারগুলোর ধসে পড়ার শঙ্কায় আছে। সেই কারণে বোলনিয়ার সিটি কাউন্সিল টাওয়ারের আকস্মিক ধসের জন্য একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করছে।
সিটি কাউন্সিল একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘সম্ভাব্য ধসের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষের রাখতে, আশে-পাশের ভবন ও জনসংখ্যার ওপর ধসের প্রভাব কমাতে ও ওই এলাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করতে একটি প্রতিরক্ষামূলক ধাতব বেষ্টনী তৈরি করা হবে।
বেষ্টনীটি মাটিতে স্থায়ীভাবে তৈরি করা হবে। এতে বিশেষভাবে ডিজাইন করা প্রোটেকশন নেট অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বৈজ্ঞানিক কমিটি ২০১৯ সাল থেকে সাইটটি পর্যবেক্ষণ করছে, তারা একটি সম্ভাব্য ধসের সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, ‘একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ছাড়া টাওয়ারের ওপর বা আশেপাশে কাজ করার জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতি নেই’।
গত এক মাস ধরে সাইটটি পর্যবেক্ষণ করে টাওয়ারের নিচে ভাঙনের একটি অপ্রত্যাশিত ও ত্বরান্বিত প্রবণতা দেখে গেছে। টাওয়ারের পাটাতন ঢেকে রাখার জন্য ব্যবহৃত পাথরটি ক্রমেই আলাদা হয়ে যাচ্ছে এবং টাওয়ারের ওপরের ইটের মধ্যে ফাটল প্রসারিত হচ্ছে।
এরই মধ্যে টাওয়ারের চলমান কাজগুলো বন্ধ করা হয়েছে এবং যতটা দ্রুতসম্ভব একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে।
একজন মুখপাত্র সিএনএনকে জানান,‘টাওয়ারটি এখনই ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা নাই।’
তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে কাজ করছি যেন এটিই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ‘এটি ঘটবেই’। বর্তমানে সতর্কতাগুলো লাল রঙের পরিবর্তে হলুদ সতর্কতায় রয়েছে, যেখানে ধস আসন্ন। এটি ভেঙে পড়তে চলেছে ঠিকই, ‘তবে কখন ধস নামতে পারে তা কেউ জানে না’ । তিন মাসও হতে পারে আবার ১০ বছর বা ২০ বছরও হতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি ধসের কোন আসন্ন ঝুঁকি থাকে তবে আমরা সবাইকে সরিয়ে নেব। পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম প্রতি ১৫ মিনিটে রিডিং প্রদান করে, ‘এর মানে হল যে আমরা একটি ধসের সতর্কতা পাব, এবং আশেপাশের এলাকা খালি করতে পারব।’
বোলনিয়া শহরের কেন্দ্রে ৪৮ মিটার উঁচু এ বিখ্যাত টাওয়ার ১২ শতকে নির্মিত হয়। ইউনেস্কো সুরক্ষিত পোর্টিকোসের পাশাপাশি এই টাওয়ার শহরের অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন।
“গারিসেনদা চার ডিগ্রি কোণে হেলে পড়েছে যা পিসার পাঁচ ডিগ্রির হেলানো টাওয়ারের চেয়ে সামান্য খাড়া অবস্থায় রয়েছে। এটি ১৪ শতকের গোড়ার দিকে ঝুঁকে পড়া শুরু করে। এতে পর্যটকরা নভেম্বর পর্যন্ত আরোহণ করতে পারতেন।”
পাটাতনের সঙ্গেসংযুক্ত পাথরের ক্রমশ বিচ্ছিন্নতা ও টাওয়ারের ইটের মধ্যে উল্লম্ব ফাটল ২০২০ সাল থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। তবে এখন তা আরো খারাপ হয়েছে।
কাউন্সিলের মুখপাত্রের মতে, ‘এই গ্রীষ্মে উচ্চ তাপমাত্রা ও বছরের শুরুতে বন্যা সহ চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোও একটি ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে হচ্ছে।
‘গারিসেনদা জোড়া টাওয়ার’ হলো বোলনিয়া শহরের কেন্দ্রস্থ একটি প্রাচীন নিদর্শন, যা সম্ভাবনপূর্ণভাবে ধসে পড়তে পারে। এই ঐতিহাসিক টাওয়ারটির সঠিক নিরাপত্তা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থানীয় কর্মীরা এটি আত্মপ্রতিরক্ষা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য সবপ্রকারের প্রস্তুতি নিয়েছে।*