এনজিও ছেড়ে কৃষিকাজে, প্রুনুমং এখন সফল উদ্যোক্তা
- চাকরি ছেড়ে কৃষিতে সফল উদ্যোক্তা প্রুনুমং মারমা
- পাহাড়ে ড্রাগন চাষে বিপ্লব, বছরে আয় ১৫ লাখ টাকা
অসীম রায় অশ্বিনী, বান্দরবান: চাকরি ছেড়ে কৃষিকে জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন বান্দরবানের কুহালংয়ের প্রুনুমং মারমা। বর্তমানে তাঁর ড্রাগন, বরই, পেয়ারা, মালটা ও কমলার মিশ্র ফলের বাগান থেকে বাৎসরিক আয় ১৫ লাখ টাকারও বেশি।
কুহালং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার এই উদ্যোক্তা এক সময় এনজিওকর্মী ছিলেন। ইউএনডিপি-তে চাকরিরত থাকা অবস্থায় কৃষির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার। ইউটিউব ও দেশের বিভিন্ন কৃষি উদ্যোক্তার সাফল্যের গল্প তাকে অনুপ্রাণিত করে।
২০২২ সালে মাত্র আড়াই একর জমিতে শুরু করেন পেয়ারা, বল সুন্দরী বরই, মালটা ও কমলার বাগান। এরপর ২০২৪ সালে আরো আড়াই একর জমিতে শুরু করেন ড্রাগন ফলের বাণিজ্যিক চাষ। বর্তমানে তাঁর ৫ একরের বাগানে রয়েছে প্রায় ৭,৫০০টি ড্রাগনের গাছ, ৪৫০টি বরই, ৭০০টি পেয়ারা ও ২০০টি কমলা-মালটার গাছ।
গত বছর ড্রাগন বিক্রি করে আয় করেন প্রায় ৩ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ফল বিক্রি করে আয় করেন ৪ লাখ টাকা। চলতি বছরে ড্রাগন ফলের উৎপাদন ১ টন ছাড়িয়েছে। তার আশা, ড্রাগন থেকে এবার আয় হবে ৬ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ফল থেকে আরও ৮-৯ লাখ টাকা।
বাগানে নিয়মিত কাজ করছেন ১০–১৫ জন শ্রমিক। পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা উশৈহ্লা মারমা জানান, প্রতিদিন তিনি ৮০০ টাকা মজুরি পাচ্ছেন এবং প্রতিটি গাছই ফর্মালিনমুক্ত ও উন্নত স্বাদের ফল দিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হ্লামংপ্রু মারমা বলেন, “এই এলাকায় এমন উদ্যোক্তা আগে কেউ হয়নি। প্রুনুমং মারমার সফলতা দেখে অনেক তরুণ এখন কৃষির দিকে ঝুঁকছে।”
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম শাহনেওয়াজ বলেন, “প্রুনুমং মারমার বাগান পরিদর্শন করা হয়েছে। তার সফলতা অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি চাইলে এই বছর জেলার সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কার পেতে পারেন।”
সফল উদ্যোক্তা প্রুনুমং বলেন, “চাকরির পেছনে না ছুটে অল্প পুঁজি ও পরিশ্রম দিয়েই সফল হওয়া সম্ভব। সরকার কৃষিবান্ধব নীতি নিচ্ছে, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পাচ্ছি—বেকার তরুণরা চাইলে আমিও পাশে থাকতে প্রস্তুত।”