মাহেরীনের নামেই ছাত্রী হাউজ
শহীদ মাহেরীনের নামে শহীদ জিয়াউর রহমান শারীরিক শিক্ষা কলেজে ছাত্রী হাউজের নামকরণ।
নিজস্ব প্রতিবেদক: আত্মত্যাগ কখনো বিস্মৃত হয় না। তা যদি হয় জীবনের বিনিময়ে অন্যের জীবন রক্ষা — তবে তা চিরকাল মানুষের হৃদয়ে গেঁথে থাকে। এমনই এক প্রেরণার নাম শহীদ মাহেরীন চৌধুরী।
সেই আত্মত্যাগী শিক্ষিকার নামেই এবার রাজশাহীর শহীদ জিয়াউর রহমান শারীরিক শিক্ষা কলেজে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ছাত্রীদের জন্য একটি হাউজের নামকরণ করা হয়েছে — ‘শহীদ মাহেরীন চৌধুরী হাউজ’।
অধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত এক গভীর আবেগঘন বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,
“মাহেরীনের আত্মত্যাগ এই জাতির জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর বীরত্ব, দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা নতুন প্রজন্মের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে। তাঁর নামেই গড়া হাউজের ছাত্রীদের মধ্যে সেই আত্মত্যাগের আলো জ্বালিয়ে দিতে চাই আমরা।”
মরহুম মাহেরীন চৌধুরী ছিলেন এক নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক। আগুনে ঘেরা বিদ্যালয়ের কক্ষে আটকে পড়া শিশুদের রক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। বহু শিক্ষার্থীকে জীবিত ফিরিয়ে আনলেও, নিজে আর ফিরে আসেননি। আগুন তাঁকে দগ্ধ করেছিল, কিন্তু নত করতে পারেনি। তাঁর শরীর পুড়লেও আদর্শ পুড়েনি, বরং তা এখন নতুন দীপ্তি ছড়াচ্ছে।
এই কলেজের প্রতিটি ছাত্রী এখন থেকে মাহেরীনের নাম শুনেই বুঝবে, বীরত্ব মানে কী। আন্তঃহাউজ প্রতিযোগিতায় ‘শহীদ মাহেরীন হাউজ’ এর নামে প্রতিবছর প্ল্যাকার্ড ও পতাকা উত্তোলন করা হবে। মর্যাদায়, সম্মানে, গর্বে উজ্জ্বল থাকবে এই হাউজ।
কলেজ ক্যাম্পাসের ছায়াঘেরা করিডোরে ছাত্রীরা যখন দৌড়াবে, ভলিবলের কোর্টে বল মারবে বা জাতীয় সংগীত গাইবে— তখন তাঁদের হৃদয়ে ভেসে উঠবে একজন নারী যিনি প্রমাণ করে গেছেন, সাহস আর ভালোবাসা মিললেই মানুষ অসাধ্যকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রমাণ করেছেন, একজন মানুষ আল্লাহর পথে আত্মত্যাগ করলে, তা হয়ে ওঠে সবার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।
শিক্ষার্থীদের ভাষায় —
“ম্যাডাম আমাদের জন্য মরে বেঁচে আছেন। তাঁর নামে হাউজ থাকা মানে, আমরা তাঁকে প্রতিদিন অনুভব করতে পারবো।”
এই উদ্যোগের মাধ্যমে শহীদ জিয়াউর রহমান শারীরিক শিক্ষা কলেজ শুধু একটি নাম নয়, একটি আদর্শকে বুকে ধারণ করল।
অবস্থান: শহীদ জিয়াউর রহমান শারীরিক শিক্ষা কলেজ,
কাটাখালী, শ্যামপুর, মতিহার, রাজশাহী।