বাংলাদেশ ব্যাংকে পোশাকবিধি: নারীদের ছোট পোশাকে নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন পোশাকবিধি: নারী কর্মীদের জন্য ছোট পোশাক পরিহারে নির্দেশনা।

বিস্তারিত প্রতিবেদন: বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নতুন পোশাকবিধি জারি করেছে, যেখানে নারী ও পুরুষ কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে, নারী কর্মীদের ক্ষেত্রে ছোট দৈর্ঘ্যের ও ছোট হাতার পোশাক পরিহার করতে বলা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

গত ২১ জুলাই ২০২৫, বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ থেকে এই অফিস আদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো একটি পেশাদার, মার্জিত ও শালীন কর্মপরিবেশ তৈরি করা। নতুন নির্দেশনা অমান্য করলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

পুরুষ কর্মীদের পোশাকবিধি

ফরমাল শার্ট (হাফ/লং স্লিভ), ফরমাল প্যান্ট, ফরমাল জুতা বা স্যান্ডেল,  জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরা নিষিদ্ধ।

নারী কর্মীদের পোশাকবিধি

শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না অথবা অন্য শালীন পেশাদার পোশাক,  সাদামাটা ও পেশাদার রঙের পোশাক, হিজাব বা হেডস্কার্ফ (ঐচ্ছিক হলেও মার্জিত),  ফরমাল স্যান্ডেল/জুতা,

ছোট হাতার ও ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক এবং লেগিংস পরা নিষিদ্ধ।

আচরণবিধি ও নীতিমালা

নির্দেশনার ১১ নম্বর ধারায় কর্মক্ষেত্রে পেশাগত আচরণ ও শৃঙ্খলা নিয়ে আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

১১(ক): নারী কর্মীদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা:

বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন ২০০৩-এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী আচরণ করতে হবে।

যৌন হয়রানির অভিযোগ ঘটনার ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে নির্ধারিত কমিটির কাছে পাঠাতে হবে।

১১(খ): সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্কতা ও দপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

১১(গ): ইতিবাচক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে:

সততা, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতামূলক মনোভাব, সহকর্মীদের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ।

মনিটরিং ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল ও ইউনিটভিত্তিক একজন মনোনীত কর্মকর্তা তদারকি করবেন।

নির্দেশনা লঙ্ঘন হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানকে অবহিত করে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ প্রেরণ করতে হবে।

প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

এই নির্দেশনায় কেউ কেউ ‘শালীনতার মানদণ্ড কাদের জন্য, কে নির্ধারণ করবে?’ — এমন প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, এই পদক্ষেপ পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলা রক্ষা করতেই নেওয়া হয়েছে।

নারী অধিকারকর্মীদের একাংশ মনে করছেন, “শালীনতা”র ব্যাখ্যা পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে চাপিয়ে দিলে তা হতে পারে পেশাগত স্বাধীনতার বিঘ্ন। বিষয়টি নিয়ে আগামীদিনে আরও বিতর্ক ও ব্যাখ্যার সুযোগ থাকতে পারে।