রাজশাহীর পশুহাটে ময়লার দুর্গন্ধে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোর উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুহাট মুন্ডুমালায় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। হাটের নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ময়লা ফেলছেন হাট প্রাঙ্গণেই।
এতে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। মুখে-নাকে কাপড় বেঁধেও রক্ষা মিলছে না, শ্বাসকষ্টের ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকে। ফলে উপজেলার প্রধান এই পশুহাটে আগের মতো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় আর দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুন্ডুমালা বাজারের পশ্চিম পাশে বসে পশুহাট। সকালে ছাগল-ভেড়া, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে গরু-মহিষের কেনাবেচা। সপ্তাহের একমাত্র হাট হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা আসেন। কিন্তু হাটের পাশেই ফেলা হচ্ছে বাজারের দোকানপাটের ময়লা ও জবাইকৃত পশুর বর্জ্য। এতে পুরো এলাকায় ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা কিনা পশু বেচাকেনার পরিবেশ নষ্ট করছে।
এক ক্রেতা বলেন, ‘গরু কিনতে এসে দেখি এমন গন্ধে দাঁড়ানোই মুশকিল। এই অবস্থায় আর আসতে ইচ্ছে করছে না।’
গরু বিক্রেতা রিপন আলী ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘দুপুর থেকে গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। গন্ধে বেশিক্ষণ থাকা যায় না। খুবই কষ্ট হচ্ছে।’
ছাগল কিনতে আসা হারুন বলেন, ‘একটা ছাগল কিনেছি। কিন্তু হাটের কাদা আর দুর্গন্ধ মিলিয়ে যা অবস্থা, খুবই বাজে লাগছে।’
এক স্থানীয় ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই। কসাইরা যেখানে-সেখানে পশু জবাই করে বর্জ্য ফেলে রাখে। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। হাটের দিন ছাড়াও আশপাশের বাসিন্দারা দুর্গন্ধের ভোগান্তিতে পড়ছেন।’
জানা গেছে, এই হাট থেকে প্রতি বছর পৌরসভার রাজস্ব আসে কোটি টাকার বেশি। তারপরও বছরের পর বছর ধরে সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
হাটের ইজারাদার শরীফ মুন্সী জানান, ‘পৌর প্রশাসককে জানানো হলেও কর্মকর্তারা গুরুত্ব দেননি।’ আরেক ইজারাদার ফিরজ কবির বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় বারবার বলেছেন। কিন্তু পৌরসভার কিছু কর্মকর্তার গাফিলতিতে ময়লা-আবর্জনা সরানো হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে মুন্ডুমালা পৌর প্রশাসক ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত সালমান বলেন, ‘বাজারে ময়লা থাকার কথা নয়। আমি ইতিমধ্যেই কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। যদি পরিষ্কার না হয়ে থাকে, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’