রাসিকের সব উন্নয়ন কাজ বন্ধ করলেন ঠিকাদাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে অর্থ বকেয়া থাকায় সব ধরনের কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ঠিকাদাররা। বুধবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের সপুরা এলাকায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা আসে।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের সচিব রুমানা আফরোজ দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে অন্তত ২৫০টি বিল ফাইল অনুমোদন না করে ফেলে রেখেছেন। এতে অন্তত ১৫ জন ঠিকাদারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা আটকে আছে। এ অবস্থায় শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করা সম্ভব না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখছেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ঠিকাদার রেজাউল করিম জানান, ‘২০ জুলাই আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে বিল ছাড়ের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা শোনা হয়নি। তাই কাজ বন্ধ ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের খোলা নেই।’

আগামী ২৭ জুলাই নগর ভবনের সামনে শ্রমিক ও সর্দারদের নিয়ে আরেকটি বিক্ষোভের ঘোষণা দেন আরেক ঠিকাদার সালাহউদ্দিন গাজী। তিনি বলেন, ‘চারটি ফ্লাইওভার, ছয়টি কাঁচাবাজার ও কয়েকটি সড়কসহ অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। কিন্তু নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো বিলই অনুমোদন করছে না। শ্রমিকদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’

ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার শাকিলুর রহমান শাকিল বলেন, ‘টাকার অভাবে কাজের গতি কমে গেছে। ফলে অর্ধসমাপ্ত সড়কগুলোতে দুর্ঘটনা ও পরিবেশ দূষণ বেড়ে গেছে। রাজশাহীর “গ্রিনসিটি” ভাবমূর্তিও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হচ্ছে যেন আমরা মূল্যহীন। অথচ আমাদের পেছনে হাজারো শ্রমিক-কর্মচারী পরিবার নিয়ে বাঁচে।’

বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার ইয়াহিয়া খান মিলু বলেন, ‘সচিব ইচ্ছাকৃতভাবে বিল আটকে রাখছেন। এতে নাগরিক ভোগান্তি বাড়ছে। সচিব দেরি করে অফিসে আসেন, আবার রাতে অফিস করেন। তিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ, তাই জনদুর্ভোগ সৃষ্টিই তাঁর উদ্দেশ্য।’

সমাবেশ শেষে ঠিকাদার রাসেল ইসলাম ফ্লাইওভার প্রকল্পের কাজ বন্ধের ঘোষণা দেন। অন্য ঠিকাদাররাও তাদের চলমান সব কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানান। সমাবেশে হাফিজুল ইসলাম, বেলাল খানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে রাসিক সচিব রুমানা আফরোজ ফোনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ঠিকাদারদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার জানা নেই কোথায় ২৫০টি বিল আটকে আছে। কেউ আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগও করেননি।’

শহরের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নকাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাগরিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।