বাবার-মায়ের পাশে চিরশায়িত শিক্ষক মাহেরীন

টুইট ডেস্ক : জীবন বাজি রেখে আগুনের লেলিহান শিখার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হলে মুহূর্তেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তরের দায়িত্বে ছিলেন মাহেরীন। দগ্ধ শরীর নিয়েও তিনি ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে আনেন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

শেষ সময়ে মাহেরীনের সঙ্গে দেখা হওয়ার স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে স্বামী মনছুর হেলাল বলেন, ‘আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরে বলল—আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ওর হাতটা ঠিকমতো ধরতেও পারিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌড়াচ্ছিল, ও তখন বাচ্চাদের বের করছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য। সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি।’

মাহেরীন চৌধুরীর বাবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চৌধুরী পাড়া গ্রামে। তিনি মহিতুর রহমান চৌধুরী ও সাবেরা খাতুন দম্পতির মেয়ে। স্বামী মনছুর হেলাল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

সম্প্রতি নিজ দাদার প্রতিষ্ঠা করা বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মাহেরীন। দুর্ঘটনার আগের দিন তিনি প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন।