বান্দরবানে অপহরণ-হত্যা: ৩ জন গ্রেফতার, লুটের মালামাল উদ্ধার

“বান্দরবানে চাঞ্চল্যকর অপহরণ-হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, ৩ জন গ্রেফতার ও লুটের মাল উদ্ধার”

বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবান পার্বত্য জেলা পুলিশের সাফল্য—ঘুমধুমে চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসাথে উদ্ধার হয়েছে নিহত ভিকটিমের মোটরসাইকেলসহ লুটকৃত মালামাল।

আজ মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার, পিপিএম (বার)। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সাংবাদিকরা।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই বিকাল ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ৩নং ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ নূরের সঙ্গে পরিচিত ইছমাইল নামের এক যুবক পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে অপহরণ করে। এর আগে ইছমাইল ভিকটিমের কাছ থেকে ধার নেয়া ৭০ হাজার টাকা ফেরত না দেওয়ায় দুইজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং সালিশি বৈঠকেও টাকা ফেরতের সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে, ইছমাইল প্রতিশোধ নিতে গত ১৮ জুলাই ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে যায় সীমান্তবর্তী এক অজ্ঞাত স্থানে। সেখানে ভিকটিমের মোবাইল ব্যবহার করে তার পরিবারকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং হুমকি দেয়। ভিকটিমের পরিবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দাবি করা টাকা পরিশোধ করলেও তিনি ফিরে না আসায় ১৯ জুলাই নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি মামলা রুজু হয় (মামলা নং-১১, তারিখ: ১৯/০৭/২৫)।

মামলার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অভিযান চালিয়ে ২১ জুলাই ঘুমধুম আজুখাইয়া এলাকা থেকে প্রধান অভিযুক্ত ইছমাইল এবং পরে তার সহযোগী রহমত উল্লাহকে গ্রেফতার করে।

আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডুলুবুনিয়া নামক গহীন পাহাড়ের খাদ থেকে উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের মরদেহ এবং মোটরসাইকেল। একই অভিযানে উখিয়া কুতুপালং এলাকা থেকে অপর সহযোগী আলী হোসেন @ মুনিয়াকেও গ্রেফতার করা হয়।

আসামিরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, ইছমাইল ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনায় দুইজন রোহিঙ্গাকে ভাড়া করে এবং যৌথভাবে মুক্তিপণ আদায়ের পর ভিকটিমকে নির্যাতন ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাটিকে ‘চরম অমানবিক ও পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আইনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না।