শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ঢাকা

শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ঢাকা, বলপ্রয়োগ নয়—শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষেই ছাত্রসমাজের ডাক

টুইট প্রতি‌বেদন: রাজধানীজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকেই ক্ষোভ দানা বাঁধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

সঠিক তথ্য না পাওয়া, নিহত ও আহতদের প্রকৃত সংখ্যা আড়াল করা, এবং শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতিবাদে আজ হাজারো শিক্ষার্থী শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের পদত্যাগ দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছে।

দফা এক, দাবি এক:
শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট ভাষ্য, “দফা এক, দাবি এক—শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ চাই।”

তারা বলছে, দুর্ঘটনার দিন থেকে এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং তথ্য গোপন করে, দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব দুইজনের বিরুদ্ধেই জবাবদিহিহীনতা ও উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে ছাত্রসমাজ।

শান্তিপূর্ণ ঘেরাও ও বিক্ষোভ:

আজ  মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিক্ষা ভবন, সচিবালয় মোড়, ঢাকা কলেজ মোড়, বিজ্ঞান ল্যাব মোড়, ও উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়।

“পদত্যাগ করুন, “ভুয়া তথ্য চাই না, সত্য চাই।”

এই প্রজন্ম—Zen Z—চায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়িত্ব। তারা বলছে, “তথ্য গোপনের একমাত্র সমাধান হতে পারে পদত্যাগ।” তাদের বক্তব্য, যদি একজন উপদেষ্টা ও সচিব সত্যিই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হন, তবে তাঁদের উচিত পদত্যাগের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।

মানবিক আহ্বান: বলপ্রয়োগ নয়

অভিভাবক, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে দাবি জানানো হয়েছে—

“শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর যেন কোনো বলপ্রয়োগ না হয়। তারা অস্ত্র হাতে নেয়নি—তাদের হাতে প্রশ্ন, তাদের মুখে প্রতিবাদ।”

এছাড়া, শিক্ষার্থীরাও বলছে—
“আমরা সত্য চাই, সংঘর্ষ নয়।”

পুলিশি অবস্থান ও পরিবেশ:

শিক্ষা ভবন ও সচিবালয় এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বলপ্রয়োগের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া:

সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে এখন ট্রেন্ড করছে হ্যাশট্যাগ #পদত্যাগ_চাই, #ZenZ_Protests, #শিক্ষাব্যবস্থার_দায়

বহু বিশিষ্ট নাগরিক, কলাম লেখক ও সাবেক ছাত্রনেতা এই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং সরকারকে দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

ছাত্রছাত্রীদের এ আন্দোলন এখন আর শুধু কোনো এক ঘটনার প্রতিবাদ নয়, বরং এটা হয়ে উঠেছে সিস্টেম চেঞ্জের ডাক। তারা বলছে, “আমরা শুধু ভবিষ্যৎ চাই না, আমরা ভবিষ্যতের জন্য লড়ছি।”

এই আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ রূপ বজায় রাখা এবং বলপ্রয়োগ এড়িয়ে দায়িত্বশীল প্রতিক্রিয়া প্রদান এখন সরকারের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।