বান্দরবানকে ‘শাস্তির স্থান’ বলায় এনসিপিকে হুঁশিয়ারি
“বান্দরবানকে শাস্তির জায়গা বলায় অবমাননার প্রতিবাদে ছাত্রসমাজের তীব্র প্রতিক্রিয়া”
অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান থেকে: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা সারজিস আলমকে বান্দরবানে “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করেছে স্থানীয় ছাত্র সংগঠনগুলো। তাঁর বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য অবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে পুরো এনসিপিকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আজ ২০ জুলাই, রোববার, বান্দরবান প্রেসক্লাবে ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবানের ছাত্র নেতারা বলেন, এনসিপি নেতা সারজিস সম্প্রতি বান্দরবান সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করে পুরো পার্বত্য অঞ্চলের মর্যাদায় আঘাত করেছেন।
কী বলেছিলেন সারজিস?
ছাত্র নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে “জুলাই পদযাত্রা” চলাকালে এনসিপি নেতা সারজিস বান্দরবানকে “শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাঠানোর জায়গা” হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই বক্তব্যকে নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের প্রতি চরম অবমাননা বলে উল্লেখ করেন।
ছাত্র সমাজের প্রতিক্রিয়া
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল বলেন, “বান্দরবান কোনো বিচ্ছিন্ন জনপদ নয়—এটি জাতিগত, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলকে ‘শাস্তির স্থান’ হিসেবে উল্লেখ করা মানে এখানকার শান্তিপ্রিয় মানুষদের হেয় করা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা স্থানীয় এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা বলেছিলেন, ১৯ জুলাই বান্দরবানে আয়োজিত এনসিপির অনুষ্ঠানে সারজিস প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু সারজিস সেই অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এ নিয়ে একটি কথাও বলেননি। বরং বিষয়টি তুললে তারা কর্ণপাত না করে চলে যান।”
কঠোর হুঁশিয়ারি
ছাত্র নেতা আসিফ ইসলাম বলেন, “সারজিস আলম ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এনসিপি’র সব কার্যক্রম বান্দরবানে অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা করা হলো।”
এছাড়া তিনি বলেন, যেসব সরকারি কর্মকর্তা “শাস্তিস্বরূপ বদলি” হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানে কর্মরত রয়েছেন, তাদের দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
সরকারকেও আহ্বান জানিয়ে ছাত্র সমাজ বলেছে, পার্বত্য অঞ্চলকে ‘বিপজ্জনক’ বা ‘দুর্নীতিবাজদের স্থান’ হিসেবে উপস্থাপন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ছাত্র নেতারা মুজিববাদকেও সরাসরি অভিযুক্ত করেন। এক ছাত্র নেতা বলেন, “মুজিববাদ নানা কৌশলে জাতিকে বিভক্ত করেছে। এভাবেই পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ বারবার অবহেলার শিকার হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সহসভাপতি মাহির ইফতেখার, খালিদ বিন নজরুল, জুবায়ের ইসলাম ও আসিফ ইসলাম।