উপদেষ্টা পরিষদে বৈচিত্র্য চান তারেক রহমান
- সুষ্ঠু নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারে উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা চান জনগণ।
- স্বচ্ছ ও সাহসী ভূমিকায় জোর দিলেন তারেক রহমান।
টুইট ডেস্ক: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। এর মধ্যেই উত্তরবঙ্গ থেকে একাধিক উপদেষ্টা নিয়োগের জোর দাবি জানাচ্ছে সাধারণ জনগণ, বুদ্ধিজীবী সমাজ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক ভারসাম্য ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে উত্তরাঞ্চলের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হলেও, বর্তমানে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে উত্তরবঙ্গ প্রায় অনুপস্থিত। এ নিয়ে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো ও দক্ষতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সেই সাথে নতুন করে জোরালোভাবে উঠেছে উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত এক স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন—
“ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে আদৌ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব কি না, এ প্রশ্ন উঠছে। দেশের ভেতরে যে সব উদ্দেশ্যমূলক ঘটনা ঘটছে, তাতে জনমনে সন্দেহ দানা বাঁধছে— সরকার কি সত্যিই নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়?”
তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এমন একটি নির্বাচন প্রয়োজন যেখানে প্রতিটি ভোটার নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন। এই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত আরও স্বচ্ছ ও সাহসী ভূমিকা গ্রহণ করা।”
তারেক রহমান আরও বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জনগণ সরকারের পাশে থাকবে, যদি সরকারের ভূমিকা নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও সাহসিকতায় পরিপূর্ণ হয়। আমাদের কোনো আবেগতাড়িত ও ভুল সিদ্ধান্ত যেন রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে চরমপন্থা বা ফ্যাসিবাদের পুনঃউত্থানের সুযোগ তৈরি না করে—এই বিষয়ে দেশবাসীকেও দায়িত্বশীল হতে হবে।”
তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামোতে আঞ্চলিক ভারসাম্য এবং প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মতো বড় অঞ্চলের উপেক্ষা জনমনে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তরবঙ্গ থেকে ৩জন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলে তা দেশের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারে।
একজন জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন— “সরকার যদি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তাহলে উপদেষ্টা পরিষদে উত্তরবঙ্গের মতো উপেক্ষিত অঞ্চল থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ সময়ের দাবি।”
তারেক রহমানের বক্তব্য দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতাকে সামনে এনেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আস্থাহীনতা ও কেন্দ্রভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরবঙ্গ থেকে নিরপেক্ষ ও পেশাদার ব্যক্তিকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা বাড়বে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে।
সরকার যদি নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে চায়, তবে উত্তরবঙ্গ থেকে সৎ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে একটি আস্থাবান পদক্ষেপ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।