রাজশাহী জেলা বিএনপির কমিটি ঘিরে উত্তেজনা
তারেক রহমানের তালিকা আটকে দিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা?
বদিউল আলম লিংকন: রাজশাহী জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে দলে উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটি নতুন কমিটির তালিকা অনুমোদন করলেও তা কেন্দ্রীয় দুই-তিনজন প্রভাবশালী নেতার হস্তক্ষেপে আটকে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সালে মাত্র তিন মাসের জন্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বহাল রয়েছে। আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ও সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকারের নেতৃত্বে দলের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিশ্বনাথ সরকারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতার গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগসহ নানা বিতর্ক রয়েছে।
দলের সাংগঠনিক শক্তি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে তারেক রহমান সম্প্রতি রাজশাহী জেলা বিএনপির জন্য একটি নতুন কমিটি অনুমোদন দেন। ৯ জুলাই এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কমিটির প্রস্তাব গৃহীত হলেও তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
রাজশাহীর তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, কেন্দ্রীয় কিছু নেতা তাদের অনুগতদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছেন। ফলে তৃণমূলের মতামত ও প্রতিনিধিত্ব উপেক্ষিত হচ্ছে। তানোরের এক বিএনপি নেতা বলেন, “ছয় বছর ধরে কমিটির জন্য অপেক্ষা করছি। এখন আবার রাজনৈতিক লবিংয়ের বলি হতে হচ্ছে।”
যদিও কেন্দ্রীয় নেতারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি, অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, অন্তত তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা কমিটির গঠনে হস্তক্ষেপ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “দলের স্বার্থ নয়, ব্যক্তিস্বার্থই বড় হয়ে উঠেছে।”
রাজশাহী-১ সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে দলীয় প্রচারণা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নতুন কমিটির ওপর নির্ভরশীল। যদি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠন না হয়, তাহলে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হতে পারে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের সাংগঠনিক ঢেলে সাজানোর এই উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ দলীয় ঐক্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকট নিরসনে দ্রুত ও স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে তৃণমূলের আস্থা ও মনোবল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সূত্র: প্রতিবেদনটি বিভিন্ন অনুসন্ধানমূলক সূত্র ও যাচাইকৃত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।