যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল ও সিরিয়া: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

টুইট ডেস্ক: সিরিয়ায় ইসরায়েল ও সিরিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক।

সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুয়াইদা অঞ্চলে কয়েক দিনের বিমান হামলা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এই যুদ্ধবিরতি একটি অস্থায়ী শান্তি আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শনিবার ভোরে এক্স (পূর্বের টুইটার)–এ দেওয়া এক পোস্টে ব্যারাক বলেন, এই যুদ্ধবিরতিটি ওয়াশিংটনের সমর্থনপুষ্ট এবং এটি তুরস্ক, জর্ডান ও সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

এ চুক্তিকে বলা হচ্ছে একটি কূটনৈতিক মাইলফলক, যা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা এবং সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিভাজন নিরসনের লক্ষ্যে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের দূত ব্যারাক বলেন: “আমরা ড্রুজ, বেদুইন এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি-আপনারা অস্ত্র নামিয়ে রাখুন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সঙ্গে একত্রে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে একটি নতুন এবং ঐক্যবদ্ধ সিরিয়া গড়ে তুলুন।

ইসরায়েল গত বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিমান হামলা চালায়, যার লক্ষ্য ছিল সরকারি স্থাপনাসমূহ। দখলদারদের দাবি করে, তারা এই হামলা চালিয়েছে ড্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে, যারা আরব ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় বসবাস করছে।

সিরিয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর অঞ্চলটিতে নতুন ক্ষমতাকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার ফলে সরকারপন্থি বাহিনী ও ড্রুজদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দশকের পর দশক ধরে চাপা থাকা জাতিগত বিভাজন আবারও সামনে চলে এসেছে।

বুধবারের ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে বলে সিরিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দামেস্কে অবস্থিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভবনে আঘাত হানার একটি মুহূর্ত সরাসরি সম্প্রচারিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, যেখানে স্টুডিওতে থাকা উপস্থাপক হামলার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে নিচু হয়ে যান।

সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বুধবার রাতের এক জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেন, সরকারি বাহিনী সুয়েইদা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে। এই অঞ্চলে সপ্তাহান্তে ড্রুজ ও বেদুইনদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়, যার মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে গিয়েই সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ড্রুজদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

শারা সরকার ড্রুজ গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পৃথক একটি যুদ্ধবিরতিতেও সম্মত হয়েছে, যা বোঝায় যে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংঘাতও ধীরে ধীরে সংলাপের দিকে এগোচ্ছে।

তবে একই ভাষণে শারা অভিযোগ করেন, “ইসরায়েল আমাদের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় এবং সিরিয়াকে একটি অস্থির যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়।