সাবেক কেএনএফ পরিবারের পাশে সেনাবাহিনী

বান্দরবান সেনা জোন: শান্তির পথে মানবিক উদ্যোগ

বান্দরবান প্রতি‌নি‌ধি: পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে আত্মসমর্পণকারী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।

জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও এরিয়া কমান্ডার, চট্টগ্রাম এরিয়ার সার্বিক দিকনির্দেশনায় বান্দরবান সেনা জোনের উদ্যোগে এই সহায়তা কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।

বান্দরবান সেনা জোনের মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান, পিএসসি, জোন কমান্ডার, বান্দরবান সেনা জোন।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন জোনাল স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন আদনান ফারাবি। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত জোন উপ-অধিনায়ক এস এম আনিসুজ্জামান উদয়, অন্যান্য সেনা কর্মকর্তা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং সহায়তাভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “শান্তি ও উন্নয়নের পথে চলতে হলে পারস্পরিক আস্থা, সহযোগিতা ও সম্মানবোধ অপরিহার্য। যারা সশস্ত্র পথ ত্যাগ করে সমাজের মূলধারায় ফিরে এসেছেন, তারা কেবল নিজেদের জন্য নয়, বরং পার্বত্য অঞ্চলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থেকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

এই সহায়তা কেবল খাদ্য সামগ্রী নয়, বরং একটি বার্তা—‘আপনারা একা নন, আমরা একসঙ্গে আছি’।”
তিনি আরও বলেন, “এই মানবিক সহায়তা শুধু পুনর্বাসনের সূচনা নয়, এটি আত্মসমর্পণকারী পরিবারগুলোর আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার একটি পথ। আমরা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই উদ্যোগে অংশ নিয়ে শান্তির সেতুবন্ধনকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানাই।”

এই সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় প্রতিটি পরিবারকে ৫০ কেজি চাল, ৫ কেজি ভোজ্যতেল, ৫ কেজি ডাল, ৫ কেজি আলু, ৫ কেজি পেঁয়াজ এবং ৫ কেজি লবণ প্রদান করা হয়। এই সহায়তা আত্মসমর্পণকারী পরিবারগুলোকে সমাজের মূলধারায় পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়তা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সহায়তাপ্রাপ্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, এই সহায়তা তাদের জীবনে একটি নতুন শুরুর ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং সমাজের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসার শক্তি জুগিয়েছে। তারা ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

এই মানবিক উদ্যোগ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অঙ্গীকারের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ ধরনের কার্যক্রম স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতার মনোভাব জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।