গোপালগঞ্জে ইউএনও বহরে হামলা, পুলিশের গাড়িতে আগুন

গোপালগঞ্জে ইউএনওর গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুর, ছাত্রলীগকে দায়ী করছে এনসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত “জুলাই পদযাত্রা” কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রকিবুল হাসানের গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার গান্ধিয়াশুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

কী ঘটেছিল?

গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইউএনও গান্ধিয়াশুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা গাড়িবহর লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় ও গাড়ি ভাঙচুর করে, এমন অভিযোগ তুলেছে এনসিপি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও এম রকিবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন—“জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ তাদের পদযাত্রার আয়োজন ছিল। কিন্তু সেটিকে বানচালের উদ্দেশ্যে আমার গাড়িবহরে গান্ধিয়াশুর এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে।”

একই দিনে পুলিশের গাড়িতে আগুন

এর আগে, সকালেই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর চালানো হয়। এই ঘটনায়ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে পুলিশ।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি বলেন—“জুলাই পদযাত্রা বানচালের জন্যই এই হামলা ও অগ্নিসংযোগ। এখনো পর্যন্ত হতাহতের খবর নেই, তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।”

ছাত্রলীগ এখনো নিষিদ্ধ, তবু সক্রিয় অভিযোগ

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ছাত্রলীগ সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হলেও এনসিপি ও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাদের নাম উল্লেখ করে দায়ী করা হচ্ছে। এনসিপির নেতারা বলছেন, সরকার দলের সহায়তায় ছাত্রলীগ নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।

এনসিপির বক্তব্য

জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে—“আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী শাখা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে সরকার বারবার গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। ইউএনওর গাড়িবহরে হামলা রাষ্ট্রের প্রতীকী অপমান।”

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হামলার সময় রাস্তায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে এবং কিছু গাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টাও চালানো হয়। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

পুলিশ জানায়, হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জেলা প্রশাসন বলছে, ইউএনওর গাড়িবহরে হামলার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জে একই দিনে পুলিশের ও ইউএনওর গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ—এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে, এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক সহিংসতা এখন শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও টার্গেট হচ্ছেন।