বান্দরবানের পাহাড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে মৌসুমি ফলের চাটনি
বান্দরবান থেকে অসীম রায়: বান্দরবান থেকে অসীম রায়: পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে উৎপাদিত সুস্বাদু ও ফরমালিনমুক্ত মৌসুমি ফলগুলো যেমন আম, আনারস, কলা, কাঁঠাল ইত্যাদি। খ্যাতি শুধু স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই, বরং সেগুলোর বিশেষ চাটনি এখন পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে দিনে দিনে পরিণত হচ্ছে অন্যতম লোভনীয় খাদ্যপণ্য হিসেবে।
বান্দরবান সদর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শৈলপ্রপাত পর্যটনকেন্দ্রে প্রতিদিন ভিড় করেন শত শত পর্যটক। এই পর্যটন এলাকায় বসবাসকারী বম সম্প্রদায়ের মানুষরা নিজেদের বাগানে উৎপাদিত তাজা ফল দিয়েই তৈরি করছেন মুখরোচক চাটনি। আম ও আনারসের এই ঘরোয়া চাটনি পরিবেশিত হচ্ছে প্লাস্টিক গ্লাসে, যার দাম মাত্র ৫০ টাকা। সাথে ৫০ টাকায় মিলছে লেবু মিশ্রিত ঠান্ডা আখের রসও।
এই চাটনি তৈরি হয় আম বা আনারস কেটে ধুয়ে, পরিমাণমতো লবণ, চিনি ও সামান্য মরিচ মিশিয়ে। ফরমালিনমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত এ পদ্ধতিতে বানানো খাবার খেয়ে পর্যটকরাও বেশ সন্তুষ্ট।
চাটনি বিক্রেতা রতন বম, যিনি ফারুক পাড়ার বাসিন্দা, জানান, “প্রতিদিন প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি হয়। লাভ খুব বেশি না হলেও, পর্যটকদের খুশি মুখ আমাদের আনন্দ দেয়।”
শৈলপ্রপাতে বেড়াতে আসা পর্যটক অধ্যাপক জয়ন্ত রায় বলেন, “বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ঘুরেছি, কিন্তু বান্দরবানের পরিবেশ ও এই চাটনির স্বাদ একেবারেই আলাদা, যেন এক স্বর্গরাজ্য।”
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এম এম শাহ্ নেয়াজ জানান, “বান্দরবানে এখন দেশীয় আম ছাড়াও বিদেশি জাতের আম উৎপাদিত হচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। পাশাপাশি ফলের চাটনির জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। এই পণ্য ভবিষ্যতে পাহাড়ি ব্যবসায়ীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে।”
বান্দরবানে মৌসুমি ফলের এই রঙিন উৎসব আর চাটনির উন্মাদনা পর্যটন, কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা—তিনটি খাতকেই নতুন সম্ভাবনার দ্বারে নিয়ে যাচ্ছে।