আয়কর ক্যাডারের ৮ কর্মকর্তা বরখাস্ত
এনবিআরের আন্দোলনের জেরে বরখাস্ত ৮ কর কর্মকর্তা, আগে ‘ক্ষমা চেয়েও’ রক্ষা হয়নি
বিস্তারিত প্রতিবেদন: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অভ্যন্তরীণ সংকট ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আরও আটজন আয়কর ক্যাডার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এই পদক্ষেপ আসে এমন এক সময়ে, যখন আন্দোলনকারীরা বরখাস্তের ভয়ে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ব্যাচ ধরে ক্ষমা চেয়ে ছিলেন। তবুও এনবিআরের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশেষ করে বদলি আদেশ ছিঁড়ে ফেলা ও অফিসিয়াল নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে এই ৮ জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়।
বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন, মাসুমা খাতুন (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২), মুরাদ আহমেদ (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫), মো. মোরশেদ উদ্দিন খান (যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া কর অঞ্চল), মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা (যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী কর অঞ্চল), মো. আশরাফুল আলম প্রধান (যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার কর অঞ্চল), মো. শিহাবুল ইসলাম (উপ কর কমিশনার, খুলনা কর অঞ্চল), মোসা. নুশরাত জাহান শমী (উপ কর কমিশনার, রংপুর কর অঞ্চল), ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল (উপ কর কমিশনার, কুমিল্লা কর অঞ্চল)।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২২ জুন জারি হওয়া বদলি আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে তারা ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ করেছেন। এতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকালীন তারা বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।
এর আগে ১ জুলাই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং ওএসডি হিসেবে এনবিআরে সংযুক্ত করা হয়।
২ জুলাই সরকার এনবিআরের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। এদের মধ্যে কর বিভাগের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মূসক নীতির সদস্য ড. মো. আবদুর রউফ, শুল্ক নীতির সদস্য হোসেন আহমদ এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. শব্বির আহমদ ছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহে এনবিআরের ভেতরে আন্দোলন, কর্মবিরতি ও বদলির আদেশ নিয়ে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তাদের অপসারণের দাবি জানায়। এরপর সরকার দফায় দফায় বদলি, বরখাস্ত ও অবসরের মতো ব্যবস্থা নেয়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এনবিআর প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারের কঠোর মনোভাব স্পষ্ট। ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও তদন্ত ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।