যুক্তরাষ্ট্রে ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ’ নীতি বন্ধ

টুইট প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসীদের জন্য দীর্ঘদিনের ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ’ নীতি বাতিল করে কঠোর শাস্তির নিয়ম চালু করেছে মার্কিন কংগ্রেস ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (ICE)।

নতুন এই নীতির আওতায়, সীমান্ত পেরিয়ে যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবে, তাদের আর ছেড়ে দেওয়া হবে না—আটক করেই রাখা হবে। এমনকি কোনো বিচারক চাইলেও তা বাতিল করতে পারবেন না বলেই জানানো হয়েছে।

কংগ্রেস অনুমোদন দিলো $৪৫ বিলিয়ন ডলার । এই আইন কার্যকর করতে মার্কিন কংগ্রেস এই বিশাল বাজেট পাস করেছে।

$৪৫ বিলিয়ন বরাদ্দ করা হয়েছে শুধু আটক কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা বাড়াতে। ফলে প্রতিদিন ১ লাখ অভিবাসীকে আটক রাখার ব্যবস্থা থাকবে, যা আগের ৫৯ হাজার বেড থেকে প্রায় দ্বিগুণ।

“কোনো ছাড় নেই, বিচারকের হাতও বাঁধা”

এই নীতির আওতায়-কেউ যদি সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে—তাকে সরাসরি আটক করা হবে। কোনো বিচারক এই আটকাদেশ বাতিল করতে পারবেন না।

“Catch and Release” সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হ‌য়ে‌ছে। নতুন এই অবস্থানকে অভিবাসনপ্রবণ রাজ্যগুলোতে “শক্ত বার্তা” হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

আদালতের আপত্তির সম্ভাবনা থাকলেও কার্যকর হচ্ছে নীতি। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তারা বলছে, “এটি ব্যাপকভাবে মানবিক অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে এবং শিশু, নারী ও পরিবারগুলো ভয়াবহ পরিবেশে পড়বে।”

তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফে দাবি করা হচ্ছে, “বর্তমানে এই নীতিকে কোন বিচার বিভাগও চ্যালেঞ্জ করতে পারছে না”। ফলে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ‘প্রবেশ মানেই আটক’ নীতি এখন কার্যকর।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অভিবাসন নীতিতে যে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য কংগ্রেস থেকে $৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে—যা শুধু ডিটেনশন সুবিধা বাড়ানোর জন্য নির্ধারিত। এর মাধ্যমে দেশজুড়ে অভিবাসীদের আটক রাখার ক্ষমতা বর্তমানে ৫৯,০০০ বেড থেকে বাড়িয়ে ১,০০,০০০-এ উন্নীত করা হচ্ছে। নতুন এই নীতির প্রধান লক্ষ্য হলো, অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়া প্রত্যেক অভিবাসীকে আটকে রাখা, কোনো রকম ছাড় না দিয়ে।

এই নীতির আওতায় বিচারকদের আর কোনো আইনি ক্ষমতা থাকবে না আটক আদেশ বাতিল করার ক্ষেত্রে, যা অনেকের মতে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার উপরও প্রশ্ন তুলছে। ফলে অভিবাসন আদালত বা ফেডারেল জজের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই অভিবাসীদের আটকে রাখা যাবে।

বিশ্লেষকরা যা বলছেন:

নতুন এই নীতিকে অনেকেই জাতীয়তাবাদী অভিবাসন কৌশল হিসেবে দেখছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যেসব নীতিকে কট্টর বলে সমালোচনা করা হতো, বর্তমান প্রশাসনও অনেকটা সেই পথেই হাঁটছে। তবে এবার রয়েছে কংগ্রেসের শক্ত সমর্থন ও বড়সড় বাজেট অনুমোদন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশকারী অভিবাসীদের জন্য এটাই সবচেয়ে কঠিন সময়। যেখানে একদিকে মানবিক উদ্বেগ বাড়ছে, অন্যদিকে সরকার “আইন মানো, নইলে আটকে থাকো” বার্তা দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

“Illegals in, detained in. No judge can override it.” — এমনই কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি ICE–এর।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এটিকে গভীর উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে, কারণ এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে—বিশেষ করে শিশু, নারী ও পরিবারভিত্তিক অভিবাসীদের জন্য।