রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাব মেশিন গান উদ্ধার, নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্য আটক

টুইট ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সেনাবাহিনী ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর যৌথ অভিযানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

এই অভিযানে একটি বিদেশি উৎপাদিত আগ্নেয়াস্ত্র (উজিআই-এসএমজি সাব মেশিন গান) এবং নগদ ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা গেছে।

রোববার (১৩ জুলাই) রাতে উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-৬ ব্লকে মাঝি কেফায়েত উল্লাহর বাসভবনে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

আটককৃতদের পরিচয় হলো-মোহাম্মদ আনাস (৩০), ১১ নম্বর শিবিরের ই-ব্লকের বাসিন্দা এবং মোহাম্মদ ইউসুফের পুত্র। মনসুর আহমেদ (৩২), ৯ নম্বর শিবিরের ব্লক সি-১৪-এর বাসিন্দা এবং নুর বশরের পুত্র। ইয়াসের আরাফাত (৩৫), একই ক্যাম্পের ব্লক সি-১৬-এর বাসিন্দা এবং নাজিমুদ্দিনের পুত্র। কেফায়েত উল্লাহ (৩৫), ১১ নম্বর শিবিরের ব্লক সি-৬-এর বাসিন্দা এবং সৈয়দ আহমেদের পুত্র।

যৌথ বাহিনী জানিয়েছে, উপরোক্ত ব্যক্তিরা নবী হোসেন গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। অভিযানে উদ্ধারকৃত উজিআই সাব মেশিন গানটি মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যবহারের জন্য পরিচিত, যা ক্যাম্প ৮ ইস্টে অবস্থিত নবী হোসেন গ্রুপের সন্ত্রাসী আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (৮-এপিবিএন)-এর অতিরিক্ত ডিআইজি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ পায় যে, তারা গোপন বৈঠকের মাধ্যমে অস্ত্র ব্যবসায়ী ইলিয়াসের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ইলিয়াস পলায়ন করলেও চার সদস্যকে আটক করা সম্ভব হয়।

নবী হোসেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আতঙ্কের একটি নাম হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। তিনি বর্তমানে মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ)-এর কমান্ডার এবং রোহিঙ্গা কমিটি ফর পিস অ্যান্ড রেপাট্রিয়েশন (আরসিপিআর)-এর প্রধান দিল মোহাম্মদের অধীনে কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালে মিয়ানমারের চাকমাকাটা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশকারী নবী হোসেন অল্প সময়ে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

তার নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্ত্র মহড়া, চাঁদাবাজি, মাদক পাচার ও সহিংসতা বাড়ছে। ফলে সাধারণ রোহিঙ্গারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগান্তি পাচ্ছেন।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত চারজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই অভিযান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গতivকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই অভিযান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতি সরকারী নজরদারির একটি প্রমাণ। তবে, নবী হোসেনের মতো কমান্ডার এবং পলাতক ইলিয়াসের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পে নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ বজায় থাকবে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই ঘটনার গভীর প্রভাব নজরদারি করছেন।