সোহাগ হত্যা মামলায় আরও দুই আসামি গ্রেফতার
টুইট ডেস্ক: রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যা মামলায় আরও দুই এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন সজীব ব্যাপারী (২৭) ও মো. রাজিব ব্যাপারী (২৫)।
ডিবি উত্তরা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ৩টার দিকে নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর পৌরসভার চায়না মোর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিবি উত্তরার একটি চৌকস টিম এই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার টুনারচর এলাকার মৃত ইউনুস ব্যাপারীর ছেলে। এই হত্যা মামলায় রাজিব ১০ নম্বর এবং সজীব ৭ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
প্রসঙ্গত, ৯ জুলাই , বুধবার, বিকেল ৬ টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল দুর্বৃত্ত সোহাগকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নম্বর-৭) দায়ের করেন, যাতে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।
এর আগে এই মামলায় পুলিশ ও র্যাব কর্তৃক পাঁচজন আসামি—মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, আলমগীর, মনির ওরফে ছোট মনির এবং টিটন গাজী—কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সজীব ও রাজিবের গ্রেফতারের মাধ্যমে এই মামলায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতজনে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ছিল ভাঙারি ব্যবসা ও দোকানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সোহাগের সঙ্গে আসামিদের ব্যবসায়িক লেনদেন ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল, যা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দিকে ধাবিত করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, “ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। মামলার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।” গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ হাইকোর্টে এই মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য রিট আবেদন করেছেন।
এই ঘটনার সঙ্গে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে, এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো জড়িত কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কার করেছে।