প্রেম-সৌভাগ্যের আশায় জায়ান্টস কজওয়ের পাথরের ফাটলে ক্ষতিকর মুদ্রা

উত্তর আয়ারল্যান্ডের বুশমিলসের কাছে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান জায়ান্টস কজওয়েতে পর্যটকদের রেখে যাওয়া মুদ্রা হাতে ধরে আছেন ন্যাশনাল ট্রাস্টের নেচার এনগেজমেন্ট অফিসার ক্লিফ হেনরি। প্রেম বা সৌভাগ্যের আশায় এই মুদ্রা পাথরের ফাটলে ঢোকানো হয়, যা এই প্রাকৃতিক বিস্ময়ের ক্ষতি করছে। — এজেন্স ফ্রান্স-প্রেস

উত্তর আয়ারল্যান্ডের জায়ান্টস কজওয়েতে পর্যটকদের মুদ্রা সমস্যা সৃষ্টি করছে

বিশ্ব ডেস্ক: উত্তর আয়ারল্যান্ডের বুশমিলসের কাছে অবস্থিত জায়ান্টস কজওয়ে, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্র। তবে, পর্যটকদের প্রেম বা সৌভাগ্যের আশায় পাথরের ফাটলে মুদ্রা ঢোকানোর অভ্যাস এই বিশ্ববিখ্যাত প্রাকৃতিক বিস্ময়ের ক্ষতি করছে।

ন্যাশনাল ট্রাস্টের নেচার এনগেজমেন্ট অফিসার ক্লিফ হেনরি ৮ জুলাই ২০২৫-এ জায়ান্টস কজওয়ের পাথরের ফাটলে পর্যটকদের রেখে যাওয়া মুদ্রা প্রদর্শন করেন। কর্তৃপক্ষ এখন পর্যটকদের পকেটে মুদ্রা রাখার এবং এই অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য সংরক্ষণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

জায়ান্টস কজওয়েতে প্রায় ৪০,০০০টি ব্যাসল্ট পাথরের স্তম্ভ রয়েছে, যা উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, প্রায় ৬০ মিলিয়ন বছর আগে ব্যাসল্ট লাভার প্রবাহের ফলে এই প্রাকৃতিক বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছিল। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, আইরিশ জায়ান্ট ফিন ম্যাককুল এই কজওয়ে তৈরি করেছিলেন।

পর্যটকরা প্রায়ই ভালোবাসা বা সৌভাগ্যের প্রত্যাশায় পাথরের ফাটলে ছোট ছোট মুদ্রা ঢোকান। এই অভ্যাস পাথরের কাঠামোর ক্ষতি করছে, যা এই স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভূতাত্ত্বিক অখণ্ডতার জন্য হুমকি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে এই মুদ্রাগুলো পাথরের ফাটল প্রশস্ত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।

জায়ান্টস কজওয়ের সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে, কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের মুদ্রা না ঢোকানোর জন্য অনুরোধ করছে। তারা জোর দিয়ে বলছে যে এই প্রাকৃতিক বিস্ময়ের সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক মূল্য রক্ষায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। পর্যটকদের এই স্থানের প্রাকৃতিক অবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে তাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

জায়ান্টস কজওয়ে শুধু উত্তর আয়ারল্যান্ডের একটি পর্যটন গন্তব্য নয়, বরং বিশ্বের একটি অনন্য ভূতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। পর্যটকদের দায়িত্বশীল আচরণ এবং সচেতনতার মাধ্যমে এই স্থানের সংরক্ষণ নিশ্চিত করা সম্ভব, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।