১২ গ্রুপে ভাগ হবে দেশের ৬১ ব্যাংক: গভর্নর

৬১ ব্যাংককে ১২ গ্রুপে ভাগ করার সিদ্ধান্ত, জানুয়ারিতে রিস্ক বেইসড সুপারভিশন চালু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও ঝুঁকিনির্ভর করতে বড় ধরনের সংস্কার পরিকল্পনার কথা জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

সোমবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর জানান, দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংককে ঝুঁকি ও ব্যবসার ধরন অনুযায়ী ১২টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রুপভিত্তিক পর্যবেক্ষণ ও তদারকি আরও কার্যকর করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

গভর্নর আরও জানান, ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা (Risk-Based Audit) কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে বাকি ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষাও সম্পন্ন হবে। এরপর ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রিস্ক বেইসড সুপারভিশন (RBS) ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করবে।

রাজনীতি ও অর্থনীতির সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, আর্থিক খাতকে রাজনৈতিক চাপ থেকে সুরক্ষা দিতে হলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন অপরিহার্য। তার ভাষায়, “রাজনৈতিকভাবে যদি অর্থনীতির ওপর চাপ থাকে, তাহলে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক নজরদারি দিয়ে ঝুঁকি কমানো সম্ভব নয়। রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ হতে হবে।”

ব্যাংক খাতে সংস্কার প্রয়োজন

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে বারবার অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় এখন সময় এসেছে মৌলিক সংস্কারের। গ্রুপভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাসের ফলে কোন ব্যাংক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, কোনটি মাঝারি বা কম ঝুঁকির—তা স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নজরদারি জোরদার করা যাবে।

বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাত নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। খেলাপি ঋণ, রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্বল তদারকি এবং পুঞ্জিভূত ঝুঁকির কারণে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে বিশ্লেষকদের মত। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগকে অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।