ব্রিকস মঞ্চে ইরানের গর্জন, মার্কিন-ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬ হাজারের বেশি

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি । ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক: ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে অনুষ্ঠিত ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। সম্মেলনে দেওয়া এক শক্তিশালী ভাষণের মাধ্যমে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, এই হামলায় ৬ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত বা আহত হয়েছেন।

আরাগচি বলেন, “এই হামলা শুধু ইরানের সার্বভৌমত্ব নয়, বরং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।” তিনি আরও জানান, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, গবেষণা কেন্দ্র, বিদ্যুৎ স্থাপনা এবং বেসামরিক পরমাণু প্রকল্প।

তিনি বলেন, “আমাদের পরমাণু স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক আইন, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT) এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন ২২৩১-এর সরাসরি লঙ্ঘন।”

ইরানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, গাজা ও দখলকৃত আরব ভূমিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে দৃষ্টি সরাতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। পশ্চিমা মিত্রদের সহযোগিতায় ইসরায়েল “দায়মুক্তির সংস্কৃতি” বজায় রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক জবাবদিহি এড়িয়ে চলেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরাগচি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমার জনগণ তাদের মাতৃভূমি রক্ষায় অবিচল ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। প্রতিরোধের মাধ্যমেই এই হামলা থেমে গেছে।”

তিনি জানান, ভবিষ্যতে যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এবং ইসরায়েলের কথিত যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোকে এখনই দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্রিকস সদস্যদের আরও সক্রিয় হতে হবে।”

বিশ্বরাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে ব্রিকস সম্মেলনে ইরানের কণ্ঠস্বর শুধু প্রতিরোধের ডাক নয়, বরং আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের আহ্বান হিসেবেই বিশ্বে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।