রাজশাহীতে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অস্ত্রের মহড়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলার হুজুরিপাড়া ইউনিয়নের বেজুড়া গ্রামে পুকুরপাড়ের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউপি সদস্য ইসাহাক আলীর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও গ্রামবাসীর মধ্যে রয়ে গেছে ভয় ও অসন্তোষ।

ভুক্তভোগী আব্দুল বারি জানান, বেজুড়া গ্রামের ১২ বিঘা আয়তনের একটি পুকুরের ভেতরে তাঁর দেড় কাঠা জমি রয়েছে। তিনি সেখানে নিজ উদ্যোগে সজনে, নিম ও কলা গাছ রোপণ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ইউপি সদস্য ইসাহাক তাঁকে লিজের টাকা দেওয়ার শর্তে গাছ কাটার নির্দেশ দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় গত শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ১৫-২০ জন যুবক নিয়ে এসে জোরপূর্বক গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।

আব্দুল বারির দাবি, তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাধা দিতে গেলে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখানো হয়। তিনি কর্ণহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। এ সময় উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, অস্ত্র হাতে থাকা যুবকদের ভিডিও ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার ইউপি সদস্যের

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য ইসাহাক আলী বলেন, “ওই পুকুরে প্রায় ১০০ জনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। নতুন লিজগ্রহীতা পুকুরপাড় পরিষ্কারের কাজ করছেন। গাছ কাটা হয়েছে সবার সম্মতিতেই। কোনো হুমকি বা জবরদস্তির ঘটনা ঘটেনি।”

তিনি আরও দাবি করেন, “আব্দুল বারি বেআইনিভাবে পুকুরপাড় দখল করে রেখেছেন। সজনে গাছ মাছ চাষের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।”

পুলিশ বলছে তদন্ত চলছে

আরএমপি কর্ণহার থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, “পুকুরটি নতুনভাবে লিজ দেওয়া হয়েছে। পূর্বে কেয়ারটেকার ছিলেন আব্দুল বারি। এখন নতুন লিজধারী পুকুরপাড় পরিষ্কার করছেন। অস্ত্রের মহড়ার কোনো ভিডিও বা প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক

এই ঘটনার পর পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে দমন করছে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রামবাসী মনে করছেন, এমন ঘটনা বিচারহীন থাকলে ভবিষ্যতে আরও সহিংসতা ঘটতে পারে।