রাজশাহীতে বিএনপির মনোনয়ন চান দুই মার্কিন প্রবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী দুই সাবেক ছাত্রনেতা। তারা হলেন- রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম এবং রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন শাহীন।
দুজনেই আশি ও নব্বই দশকে রাজশাহীতে ছাত্রদলের রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয় এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পেশাগতভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। তবে দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তাঁরা প্রবাসে থেকেও রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।
ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম
বর্তমানে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে চিকিৎসক ও জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম ছাত্রজীবনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ও ছাত্রসংসদের ভিপি ছিলেন। আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তিনি বর্তমানে জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘দেওয়ান ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে বাগমারা অঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায়দের চিকিৎসা সহায়তা, খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম বলেন: “স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি- এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অপূর্ণতা। তাই সবসময় মনে হয়েছে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। আমি মনে করি, রাজনীতি হলো সেই প্ল্যাটফর্ম, যেখানে থেকে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব।”
তিনি বলেন, “বাগমারা একটি সম্ভাবনাময় জনপদ। কিন্তু যুগের পর যুগ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে প্রবাসে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক সংযোগ কাজে লাগিয়ে এই এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।”
“আমি এখনও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার আদর্শ বুকে ধারণ করি। দেশের রাজনৈতিক সংকটের সময়ে মাঠে থাকতে চাই। আমার বিশ্বাস, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবো।”
অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন শাহীন
অধ্যাপক শাহীন নব্বই দশকে রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবন শেষে শিক্ষকতা করেছেন মুন্ডুমালা মহিলা কলেজে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রবাসী হলেও বিএনপির সঙ্গে সক্রিয় রয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁর পিতা মোজ্জাম্মেল হক একজন প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক শাহীন বলেন: “আমি নব্বইয়ের গণআন্দোলনের সময় রাজশাহীর রাজপথে ছিলাম। আজও সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “গোদাগাড়ী-তানোর জনপদের মানুষ পরিবর্তন চায়। যদি দল আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমি জনগণের পাশে থেকে গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য কাজ করবো। প্রবাসে থেকেও বিএনপির আন্তর্জাতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় থেকেছি, এখন দেশের মাটিতে ভূমিকা রাখতে চাই।”
“জুলাই গণআন্দোলনের সময়ও প্রবাস থেকে সক্রিয় ছিলাম। দেশের প্রয়োজনে রাজপথে থাকতে আমি প্রস্তুত।”
দুই নেতাই বলেন, বিএনপির প্রতি তাদের নিষ্ঠা দীর্ঘদিনের। প্রবাসে থাকলেও দলের কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন হননি কখনো। তাই তাঁরা মনে করেন, দল যদি তাঁদের মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দেয়, তাহলে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন এবং নিজ নিজ এলাকার উন্নয়ন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অবদান রাখতে পারবেন।